‘কল সেন্টার’ খুলে ব্যবসা প্রতারণার, গ্রেফতার আট

পুলিশ জানিয়েছে, একবালপুরের এক বাসিন্দার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে তারা ওই চক্রের সন্ধান পেয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৯ ০১:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

কল সেন্টারের আড়ালে চলত প্রতারণা-চক্র। শহরের দু’জায়গায় এমনই ভুয়ো কল সেন্টার খুলে প্রায় ১৫০ কর্মীকে কাজে লাগিয়ে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লোক ঠকাচ্ছিল প্রতারকেরা।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, একবালপুরের এক বাসিন্দার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে তারা ওই চক্রের সন্ধান পেয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে রাজারহাট এবং সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর থেকে ধরা হয়েছে চক্রের আট সদস্যকে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ-সহ প্রচুর নথিপত্র। রাজারহাট এবং সল্টলেকের দু’টি অফিসই ‘সিল’ করে দিয়েছে পুলিশ। ওই দুই অফিস থেকেই চলত প্রতারণার কারবার।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঘটনার সূত্রপাত গত মার্চ মাসে। একবালপুর থানা এলাকার ভূকৈলাস রোডের বাসিন্দা মহম্মদ ইশাকের মোবাইলে ফোন করে তাঁকে সহজে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয় প্রতারকেরা। ইশাক পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি ছ’লক্ষ টাকা ঋণের আবেদন করেন। আবেদন মঞ্জুর হয় এবং ইশাকের সমস্ত নথি জমা নেয় ওই সংস্থা। তার পরে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে তাঁকে বলা হয়, ‘প্রসেসিং ফি’ বাবদ এক লক্ষ আট হাজার টাকা জমা দিতে হবে। অভিযোগকারী ওই টাকা জমা দিলেও ঋণ পাননি। এমনকি, মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ হয়ে যায়। তদন্তে নেমে পুলিশ ওই অ্যাকাউন্টের সূত্র ধরে জানতে পারে, রাজারহাট এলাকার একটি এটিএম থেকে ওই টাকা তোলা হয়েছে। পুলিশ সেখানকার সিসিটিভি-র ছবি দেখে বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজনের সন্ধান পায়। পরে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া এবং সোর্স মারফত পুলিশ জানতে পারে, ওই প্রতারকেরা বৃহস্পতিবার রাজারহাটের চিনার পার্কে জড়ো হবে।

Advertisement

পুলিশ সেখানে হানা দিয়ে বেশ কয়েক জনকে আটক করে। অভিযোগ, তারাই এটিএম থেকে টাকা তুলে ভাগ-বাঁটোয়ারা করেছিল। আটকদের জেরা করতেই ওই কল সেন্টারের সন্ধান মেলে। পুলিশের দাবি, মূলত ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নাম করেই বিভিন্ন গ্রাহককে টোপ দিত ওই কল সেন্টারের কর্মীরা। এই ব্যবসা চলছিল বছরখানেক ধরে।

পুলিশ জানায়, ধৃতদের মধ্যে হরিদেবপুরের বাসিন্দা অঞ্জন দাস এবং নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা প্রশান্ত চক্রবর্তী ওই প্রতারণা-চক্রের দুই মাথা। বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলত তারা। পরে সেখানে প্রতারণার টাকা জমা পড়লে অ্যাকাউন্টের মালিককে অল্প কিছু দিয়ে বাকিটা নিজেরা সরিয়ে নিত। এক তদন্তকারী জানান, বছরখানেক আগে এক ভিক্ষাজীবীর ছবি তুলে এবং তাঁর নামে নথি বানিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছিল প্রতারকেরা। তিনশোরও বেশি ঋণ আবেদনকারীকে ওই চক্রটি প্রতারিত করেছে বলে জেনেছে পুলিশ।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement