প্রতীকী ছবি।
ওষুধ কিনে দেওয়ার নামে প্রতারণা করা হয়েছে, এই দাবিতে এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল কয়েক জনের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম রবীন দাস (৪০)। ঘটনায় গোপাল মাইতি নামে রাত্র্রিনিবাসের এক কর্মী, সুশান্ত মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি-সহ আরও এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কয়েক বছর আগে চোর সন্দেহে পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল কোরপান শাহ নামে এক যুবককে। সেই ঘটনায় চার পড়ুয়া-চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মামলাটি এখনও বিচারাধীন।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতে এক যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁর শরীরে মারের একাধিক দাগ ছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, রবীনকে বাঁশ, লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, মেডিক্যাল কলেজের দু’নম্বর গেটের দিকে রাত্রিনিবাসের কাছে মারধর শুরু হলেও এক সময়ে রবীন কলেজ স্ট্রিট ধরে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁকে ধাওয়া করে ফের মারা হয়। রবীন পড়ে গেলে পালায় অভিযুক্তেরা।
স্থানীয়েরা বৌবাজার থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে রবীনকে এন আর এসে নিয়ে যায়। সেখানে রবীনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। রাতেই পুলিশ সুশান্ত, গোপাল এবং অন্য এক ব্যক্তিকে আটক করে। জেরায় গোপাল জানিয়েছে, ভর্তি করানোর জন্য রবীন রোগীর পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিতেন।
পুলিশকে সুশান্ত জানিয়েছে, তিন দিনেক আগে তার ক্যানসার আক্রান্ত ছেলের ওষুধ কিনে দেওয়ার জন্য রবীন তিন হাজার টাকা নিয়েছিলেন। আরও কিছু রোগীর পরিবারের থেকেও টাকা নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরে উধাও হয়ে যান। সোমবার তিনি হাসপাতালে এলে পরিজনেরা টাকা এবং ওষুধ চান। অভিযোগ, রবীন টাকা বা ওষুধ কোনওটাই দিতে রাজি হননি। অভিযোগ, এর পরে সুশান্ত, গোপাল-সহ আরও অনেকে মিলে পড়ে থাকা বাঁশ, রড তুলে রবীনকে বেধড়ক মারতে শুরু করে। পুলিশের দাবি, জেরায় প্রাথমিক ভাবে এ কথা ধৃতেরা স্বীকার করেছে।
মারধরের পিছনে অন্য কারণ রয়েছে কি না, এবং ঘটনায় আর কে কে ঘটনায় জড়িত, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে প্রশ্ন উঠেছে, মারধরের সময়ে পাশেই থাকা হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ি থেকে বাধা দেওয়া হয়নি কেন? উচ্চ পদস্থ পুলিশ কর্তারা জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘কোভিড পরিষেবার জন্য অন্য রোগী ভর্তি বন্ধ থাকায় রাত্রিনিবাসও বন্ধ। সেখানে কী করে রোগীর পরিজনেরা থাকছিলেন, তা রাত্রিনিবাস পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।’’