পুলিশ-জনগণের যোগাযোগ রক্ষার বৈঠকে স্থানীয় থানা প্রতিশ্রুতি দিলেও এলাকায় গাঁজা বিক্রি বন্ধ হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। প্রতীকী চিত্র।
পুলিশ-জনগণের যোগাযোগ রক্ষার বৈঠকে স্থানীয় থানা প্রতিশ্রুতি দিলেও এলাকায় গাঁজা বিক্রি বন্ধ হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। শেষমেশ থানার বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ জানিয়ে খোদ নগরপালকে চিঠি লিখেছিলেন শাসকদলের স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি। সেই চিঠি দেওয়ার দু’-এক দিনের মধ্যেই দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
বিধাননগর কমিশনারেটের বাগুইআটি থানার অধীন জগৎপুর এলাকার বাসিন্দারা প্রকাশ্যে গাঁজা ও মাদক বিক্রির বিরুদ্ধে গত ডিসেম্বরেই পুলিশ ওজনগণের সমন্বয় বৈঠকে সরব হয়েছিলেন। অভিযোগ, তা সত্ত্বেও এলাকায় মাদকের বিক্রি বন্ধ হয়নি। বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রেরখবর, কারা গাঁজা বিক্রি করছেন, তেমন দু’-তিনটি নাম দিয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানান স্থানীয় ২০ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি প্রসেনজিৎ নাগ। তার পরে গ্রেফতার হয় দুই অভিযুক্ত।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, কেন সমন্বয় বৈঠকে গাঁজা ও মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে নাগরিকেরা সরব হওয়ার পরেও ছ’মাস চুপচাপ রইল বাগুইআটিথানা? কেন পুরপ্রতিনিধির চিঠি দেওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করল পুলিশ? প্রসেনজিতের দাবি, ‘‘বার বার বলা সত্ত্বেও বাগুইআটি থানা গাঁজা ও মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছিল না। বাধ্য হয়ে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি লিখি। শুনলাম, দু’জন গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু কেন আমায় চিঠি লিখতে হবে, কেন নাগরিকদের অভিযোগ শুনে সক্রিয় হবে না পুলিশ?’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমি এক জন পুর প্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও গাঁজা তথা মাদক ব্যবসা ঠেকাতে থানার সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমায় কমিশনারকে চিঠি লিখতে হয়েছে। জানি না, ওই দুষ্কৃতীরা অন্য কোনও বড় খুঁটি ধরে রেখেছে কি না।’’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ব্যারাকপুরে ডাকাতের গুলিতে সোনার ব্যবসায়ীর ছেলের মৃত্যুর ঘটনার পরে পুলিশের ভূমিকার খোলাখুলি সমালোচনা করেছেন সেখানকার সাংসদ, তৃণমূলের অর্জুন সিংহ।
প্রসেনজিতের চিঠির কথা স্বীকার করে পুলিশের এক শীর্ষকর্তা জানান, দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তিনি বলেন, ‘‘যে দু’জনকে এ বার গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে এক জনের মাদক বিক্রির পুরনো রেকর্ড রয়েছে। তাকে আগে বাগুইআটি থানাই গ্রেফতার করেছিল। মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে আমাদের সব সময়ে অভিযান চলে।’’
বাগুইআটি থানার বিরুদ্ধে অতীতেও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। গত বছর পুজোর আগে ওই থানা এলাকার বাসিন্দা দুই পড়ুয়াখুন হয়ে যায়। ওই দুই ছাত্র নিখোঁজ থাকার পরেও বাগুইআটি থানার পুলিশ তাদের উদ্ধার করতে গড়িমসি করেছে বলে সেই সময়ে অভিযোগ উঠেছিল। দুই ছাত্রের দেহ উদ্ধার হওয়ার পরে ওই থানার ওসি-কে ক্লোজ করে দেওয়া হয়।
তবে বাগুইআটি থানা এলাকার জগৎপুরই শুধু নয়, পার্শ্ববর্তী একাধিক এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় ছোট ছোট জিনিসপত্র চুরির ঘটনা বেড়েছে। এর সঙ্গে মাদকাসক্তদের যোগাযোগ রয়েছে বলেই মনে করছেন স্থানীয়েরা।