প্রতীকী ছবি।
ডাকাতির ঘটনায় বাধা দেওয়াতেই তিলজলার কুষ্টিয়া সরকারি আবাসনের বাসিন্দা মধ্যবয়সি ব্যক্তিকে পরিচিতের হাতে খুন হতে হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে এমনটাই জেনেছে পুলিশ।
আবাসনের সি সি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে ওই খুনের কিনারা করল তিলজলা থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গড়িয়া থেকে শুভ জোয়ারদার নামে মূল অভিযুক্তকে ধরা হয়। তাকে জেরা করে অন্য অভিযুক্ত রাহুল হালদার ওরফে নাটা রাহুলকে গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে আবাসনের তিনতলায় নিজের ফ্ল্যাট থেকে জয়ন্ত মুখোপাধ্যায় (৪৫) নামে এক ব্যাক্তির গলাকাটা দেহ উদ্ধার হয়। গোটা বিছানায় রক্তের দাগ ছিল। দেওয়ালেও রক্তের ছোপ ছিল বলে জানান তদন্তকারীরা।
তদন্তে জানা যায়, বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকে ফ্ল্যাটে একা থাকতেন জয়ন্তবাবু। সম্প্রতি তাঁর কাজ চলে যায়।
আবাসন থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেখে, গোটা ঘর তোলপাড়, দু’টি আলমারির জিনিসপত্র ছড়ানো। ফ্ল্যাট থেকে রক্তমাখা বঁটি ও ছুরি উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের অনুমান ছিল, জয়ন্তবাবুকে খুন করতে সেগুলি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হয়েছে। টাকা, গয়না এবং মৃতের মোবাইলটি ফ্ল্যাটে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
খুনিদের খোঁজে দিনভর ওই আবাসনের সি সি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৬ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ জয়ন্তবাবু তাঁর এক ভাগ্নের অপেক্ষা করছিলেন। সেই দিনই জয়ন্তবাবুকে শেষ বার দেখা যায়। পুলিশ ৬ ডিসেম্বর রাতের যাবতীয় সি সি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে দুই যুবকের ছবি পায়। ওই ছবি আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীকে দেখিয়ে তাঁর বিবরণ অনুযায়ী কলকাতা পুলিশের শিল্পীকে দিয়ে আঁকানো হয়। সেই ছবি আর সোর্স লাগিয়ে গভীর রাতে শুভকে ধরা হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, শুভর মা এক সময়ে জয়ন্তবাবুর ফ্ল্যাটে কাজ করতেন। সেই সূত্রে শুভ জয়ন্তবাবুকে ‘মামা’ ডাকত। ওই আবাসনের সম্পাদক টিটো মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগেও একাধিক বার শুভকে আসতে দেখা গিয়েছে।” আবাসন কমিটির সম্পাদকের কথায়, “পঞ্চাশ বছরে আবাসনে খুনের ঘটনা এই প্রথম। এখানে বয়স্করা বেশি থাকেন। তাই আরও সি সি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০ ডিসেম্বর এ নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।”
এ দিকে শুক্রবার ধৃতদের আলিপুর আদালতে তোলা হলে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত হয়।