৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী কংগ্রেস প্রার্থী সন্তোষ পাঠক ও তাঁর যুদ্ধের সেনাপতি অমিতাভ চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র
কঠিন লড়াইয়ে জিতলেন কংগ্রেসের সন্তোষ পাঠক। রবিবার ভোটের দিন কলকাতা পুরসভার ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। কংগ্রেস প্রার্থী সন্তোষ এবং তাঁর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট অমিতাভ (কাল্টু) চক্রবর্তীকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছিল শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আরও একটি ওয়ার্ডে জিতেছে কংগ্রেস। ১৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়াসিম আনসারি। তবে সন্তোষের লড়াই অনেক কঠিন ছিল। আর তিনিই কংগ্রেসের একমাত্র জয়ী যিনি গতবারেও জিতেছিলেন।
সন্তোষের বিরুদ্ধে এ বার তৃণমূল ময়দানে নামিয়েছিল যুবনেতা শক্তিপ্রতাপ সিংহকে। ভোটের দিন তৃণমূলের এই যুবনেতার সঙ্গে সন্তোষের দ্বৈরথও হয়েছিল বেশ কয়েক বার। কিন্তু তাতেও দমে যাননি তিন বারের কংগ্রেস কাউন্সিলর। এক কথায় কলকাতার এই পুরভোটে সন্তোষই ছিলেন কংগ্রেসের ‘শিবরাত্রির সলতে’। সেই সম্মানের যুদ্ধে জয়ী হয়ে চতুর্থ বারের জন্য কাউন্সিলর হলেন এই ডাকাবুকো নেতা। তিনি জিতলেন ২৯৭৮ ভোটে।
মঙ্গলবার ভোটগণনায় প্রথম থেকে এগিয়ে ছিলেন ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেসপ্রার্থী। ব্যবধান সামান্য ওঠানামা করলেও কখনও পিছিয়ে যাননি তিনি। সকাল ৮টায় গণনা শুরু হওয়ার পর সাড়ে ১০টার মধ্যেই নিজের জয় নিশ্চিত করেন নেন সন্তোষ। ঘটনাচক্রে, চৌরঙ্গি বিধানসভার অন্তর্গত ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের জনতা কোনওদিনও খালিহাতে ফেরায়নি সন্তোষকে। ২০১৪ সালের উপনির্বাচন কিংবা ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট— দুই বিধানসভা নির্বাচনে সন্তোষ তৃতীয় স্থানে শেষ করলেও ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে এক নম্বর স্থানটি ছিল তাঁরই।
আর ২০০৫, ২০১০ এবং ২০১৫ সালের পুরভোটে সন্তোষেই আস্থা রেখেছে কলকাতার পুরসভার এই ঐতিহ্যবাহী ওয়ার্ড। ঘটনাচক্রে, সন্তোষের এই ওয়ার্ডেই রয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা, মহাকরণ, নবমহাকরণ সঙ্গে সেন্ট জন্স চার্চ। এই ওয়ার্ডেই রয়েছে রাজভবন। তার ফলস্বরূপ রাজ্যপালও এই ওয়ার্ডেরই ভোটার।
এমন একটি ঐতিহ্যশালী ওয়ার্ডে নিজের দুর্গ সামলাতে প্রথম থেকেই কোমর বেঁধেছিলেন সন্তোষ। সেই যুদ্ধে তাঁর সেনাপতি ছিলেন কংগ্রেসনেতা অমিতাভ। তিনিই ছিলেন সন্তোষের মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট। সন্তোষের জয়ের পর অমিতাভ বলছেন, ‘‘ভোটের দিন আমাকে আর সন্তোষকে মারধরও করা হয়েছিল। তাতেও আমরা মাঠ ছাড়িনি!এমন সন্ত্রাসের মধ্যে মানুষ আমাদের ওপর আস্থা রাখায় আমরা কৃতজ্ঞ।’’