শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিধানসভা বেহালা পশ্চিমে নিজের ওয়ার্ড ধরে রাখার লড়াইয়ে কলকাতা পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী রত্না রায় মজুমদার। নিজস্ব চিত্র
শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কেন্দ্র বেহালা পশ্চিম থেকেই নির্বাচিত হন কলকাতা পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী রত্না রায় মজুমদার। এ বার তিনি সপ্তম বারের জন্য পুরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। পুর রাজনীতিতে তাঁর মতো এতদিনের অভিজ্ঞতা আর কোনও প্রার্থীর নেই বলেই পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা।১৯৮৫ সালে যখন বেহালা জনপদ প্রথম কলকাতা পুরসভার সঙ্গে যুক্ত হয়, সেই বছরেই প্রথম বার পুর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন রত্না। সেই থেকে টানা ২০০৫ সালের ভোট পর্যন্ত তিনিই ছিলেন ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএমের পুর প্রতিনিধি। এ বার জয়ী হলে তিনি সপ্তম বারের জন্য কলকাতা শহরের পুর প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। এর আগে প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সাত বার পরপর পুর প্রতিনিধি হওয়ার নজির রয়েছে।তবে ওয়ার্ড বদল হয়েছিল শোভনের।
২০১০ সালে শুদ্ধিকরণের নামে একঝাঁক কাউন্সিলরকে টিকিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিপিএম। সেই কারণেই ২০১০ সালে ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী বদল করে সিপিএম। সে বারই তৃণমূল প্রার্থী দোলা সরকার জয় পান ওই ওয়ার্ডে। ২০১১ সালে ক্ষমতা বদল হয় রাজ্যে। বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ শিল্পমন্ত্রী হন।২০১৫ সালের নির্বাচনে ফের সিপিএম ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী করে রত্নাকে। পুনরুদ্ধার হয় ১২৮ নম্বর ওয়ার্ড। রত্নাকেই করা হয় বামফ্রন্ট পুরসভার দলের বিরোধী নেত্রী। যদিও, পুর প্রশাসন তাঁকে কখনওই বিরোধী দলনেত্রীর আনুষ্ঠানিক মর্যাদা দেয়নি বলেই অভিযোগ রত্নার। কিন্তু এ বারে ভোটে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী পার্থ সরকার (ভজা)। যিনি তৃণমূল মহাসচিব পার্থর ঘনিষ্ঠদের অন্যতম বলেই পরিচিত এলাকায়। তিনি ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে এই ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়ে এসেছেন।তাই শিল্পমন্ত্রীর প্রতিনিধিকে হারাতে যে বাড়তি পরিশ্রম করতে হবে তা এক বাক্যেই মেনে নিচ্ছেন বর্ষীয়ান এই পুর প্রতিনিধি।
তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের ওয়ার্ডে চিরকাল উৎসবের মেজাজে ভোট হয়ে এসেছে। আমার বাড়িতে তৃণমূল প্রার্থী ভজাবাবু এসেছিলেন প্রচার করতে। তাঁকে আমি অনুরোধ করেছি, যেভাবে ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ ভোট দেন, সেভাবেই যেন এ বারেও ভোট দিতে পারেন।’’প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে বেহালা পশ্চিম বিধানসভার অধীন ১০টি ওয়ার্ডেই জয় পেয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থীরা। কিন্তু ২০১৫ সালে পার্থর বিধানসভা কেন্দ্র পশ্চিম বেহালার ১২৭ ও ১২৮ নম্বর ওয়ার্ড পুনরুদ্ধার করতে সফল হয় সিপিএম। বেহালা পশ্চিমের অধীনে থাকা ১০টি ওয়ার্ডে ফের ‘বিজয় কেতন’ ওড়ানোই লক্ষ্য স্থানীয় বিধায়ক পার্থর। আর পুরসভার বিরোধী দলনেত্রীর লক্ষ্য, এই যুদ্ধে নিজের ওয়ার্ডে লাল পতাকার জয়ের ধারা অক্ষুন্ন রাখা।