এ বছর রাসবিহারী কেন্দ্র থেকে জিতে দেবাশিস প্রথম বার বিধায়ক হয়েছেন। নিজস্ব চিত্র।
গত দু’দশক ধরে ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশিস কুমার। কিন্তু তাঁর কাঁধেই বর্তেছে ৮৪টি ওয়ার্ডে জয় ছিনিয়ে আনার দায়িত্ব। এ বারও তিনি ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডে শাসকদলের প্রার্থী। ঘটনাচক্রে, এ বছর বিধানসভা নির্বাচনে রাসবিহারী কেন্দ্র থেকে জিতে তিনি প্রথম বার বিধায়ক হয়েছেন। দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল সভাপতিও দেবাশিস। ফলে তাঁর উপরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দুর্গ’ রক্ষার দায়িত্ব।
তৃণমূল কলকাতা জেলাকে দুটি সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করেছে। উত্তর কলকাতার সংগঠনের দায়িত্বে বরাহনগরের বিধায়ক তাপস রায়। দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূলের দায়িত্বে দেবাশিস। ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডের পাশাপাশি সাংগঠনিকভাবে দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূলের অধীনে যে ৮৪টি ওয়ার্ড রয়েছে, সেগুলি জেতার দায়িত্বও তাঁর কাঁধেই। আগাগোড়াই তৃণমূলের ‘দুর্গ’ দক্ষিণ কলকাতা। তাই সেই জেলার সভাপতি হিসেবে যে প্রত্যাশার চাপ তাঁর উপরেই সবচেয়ে বেশি, তা মেনে নিচ্ছেন রাসবিহারীর বিধায়ক।
তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর একটি নির্দিষ্ট নির্ঘণ্ট তৈরি করে নিয়েছেন দেবাশিস। সকাল ৮-১১টা পর্যন্ত নিজের ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচার করছেন তিনি। ১১টার পর থেকে দুপুর এবং বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত কখনও প্রচারে যাচ্ছেন গড়িয়ায়, কখনও যাদবপুর, কখনও গার্ডেনরিচ, কখনও মেটিয়াবুরুজ, আবার কখনও বেহালা হয়ে ভবানীপুর ও রাসবিহারীর অলিতে-গলিতে। সঙ্গে দলের প্রার্থীরা।
৮৫ নম্বর ওয়ার্ডে দু’দশক ধরে জিতে আসছেন দেবাশিস। ২০০০ সালে অবশ্য নির্দল প্রার্থী হিসেবে জোড়াপাতা প্রতীক নিয়ে জিতেছিলেন তিনি। আবার ২০০৫ সালে অধুনাপ্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের তৈরি মঞ্চের প্রতীক ‘ঘড়ি’ চিহ্ন নিয়ে দ্বিতীয় বার জয়। ২০১০ এবং ২০১৫ সালে ওই ওয়ার্ড থেকেই তৃণমূলের জোড়াফুল প্রতীকে জয়লাভ। হয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদও। ফলে ৮৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নিজের জয়ের ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত দেবাশিস। তাই ছুটে বেড়াচ্ছেন গোটা দক্ষিণ কলকাতা।
কলকাতা পুরসভার ন’টি ওয়ার্ড— ৮১, ৮৩, ৮৪,৮৬, ৮৭, ৮৮, ৮৯, ৯০ এবং ৯৩ নিয়ে দেবাশিসের রাসবিহারী বিধানসভা। কিন্তু দেবাশিসের ৮৫ নম্বর ওয়ার্ড বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। কিন্তু তাতে তাঁর কোনও অসুবিধা হচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন তিনি। কারণ, রাসবিহারী কেন্দ্রটি ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডের লাগোয়া।
তবে নিজের ওয়ার্ড বা নিজের বিধানসভার ওয়ার্ডগুলি জেতা নিয়ে বেশি ভাবছেন না দেবাশিস। তাঁর কথায়, ‘‘দল আমাকে ৮৪টি ওয়ার্ড জেতার দায়িত্ব দিয়েছে। আমি চেষ্টা করব যথাসম্ভব বেশি ওয়ার্ড জেতার। গণতন্ত্রে মানুষ যে রায় দেবেন, তা আমাদের মাথা পেতে নিতে হবে। তবে গত ১০ বছর কলকাতা পুরসভায় আমরা যে কাজ করেছি, সেই অনুযায়ী অন্তত ৮০টি ওয়ার্ড জেতা আমার লক্ষ্য।’’