হেলে পড়া বহুতল সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান খুঁজছে কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
বাঘাযতীনে হেলে পড়া ফ্ল্যাটবাড়ি ঘিরে বিতর্কের মাঝে কলকাতার আরও বেশ কিছু জায়গায় হেলে থাকা বহুতলের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। এই অবস্থায় হেলে পড়া বহুতলের সমস্যা সমাধানের জন্য পদক্ষেপ করছে কলকাতা পুরসভা। এ বিষয়ে হরিয়ানার এক পেশাদার সংস্থার পরামর্শ নিচ্ছে পুরসভা। হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রের ওই সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে বুধবার পুরসভায় বৈঠক করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুরসভা সূত্রে খবর, পরবর্তী সময়ে শহরে হেলা বাড়ি সোজা করতে কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে, সে বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা পেতেই এই বৈঠক।
বাঘাযতীনকাণ্ডের পর ভবানীপুর, এন্টালি, ট্যাংরা এবং তপসিয়াতেও হেলে পড়া বহুতল দেখা গিয়েছে। পর পর এই ঘটনায় হেলা বাড়ি থেকে সমাধানের পথ খুঁজতে উদ্যোগী হয় পুরসভাও। বাঘাযতীনের হেলে পড়া ফ্ল্যাটবাড়ি বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন ফিরহাদ। সম্প্রতি এ বিষয়ে পুরসভায় একটি রিপোর্টও জমা পড়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, প্রাথমিক বিপর্যয়ের পরে ‘লিফটিং’-এর কাজও প্রযুক্তিগত নিয়ম না মেনেই করা হয়েছিল বলে রিপোর্টে উঠে এসেছে। ফ্ল্যাটবাড়িটি হেলে পড়ার কারণে সেখানে দু’টি ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছিল না। সেই কারণে তড়িঘড়ি সেটি সোজা করার চেষ্টা করছিলেন প্রোমোটার।
প্রোমোটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গাড়ি তোলার যন্ত্র দিয়ে বাড়ি ‘লিফ্টিং’-এর কাজ করানো হয়েছে। ফ্ল্যাটবাড়ি তোলার আগে মাটি পরীক্ষা করেও দেখা হয়নি বলে অভিযোগ। প্রোমোটার একটি অপেশাদার সংস্থাকে এই কাজের দায়িত্ব দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠে এসেছে। এই অবস্থায় পুরনো বাড়ি কী ভাবে সোজা ধরে রাখতে হবে, বা হেলা বাড়ি সোজা করা জন্য কী পদক্ষেপ করা প্রয়োজন, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে চাইছে কলকাতা পুরসভা। সেই মতো বুধবার হরিয়ানার এক পেশাদার সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন মেয়র।
গত ১৪ জানুয়ারি বাঘাযতীনের বিদ্যাসাগর কলোনি এলাকায় চারতলা ওই ফ্ল্যাটবাড়ি এক দিকে হেলে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক জন জানিয়েছেন, প্রথম থেকেই বহুতলের এক দিক ছিল নিচু। সম্প্রতি তা উঁচু করার কাজ শুরু হয়েছিল। মাসখানেক আগেই ওই কাজের জন্য বহুতলের বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে ঘটনার সময়ে বহুতলে কেউ ছিলেন না। তাই হতাহত হওয়ার ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। সে রাত থেকেই বহুতলটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়েছিল। বহুতলের ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত প্রোমোটার পলাতক ছিলেন। ১৬ জানুয়ারি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকখালির একটি রিসর্ট থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ববি বলেছিলেন, ‘‘গাড়ি তোলার যন্ত্র দিয়ে ফ্ল্যাটবাড়ি তোলার (লিফটিং) চেষ্টা হয়েছিল। সেখান থেকেই বিপত্তি ঘটেছে।’’