বাবা ক্ষিতি গোস্বামী বরাবরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখেছেন বলেই জানালেন পেশায় মনস্তত্ত্ববিদ বসুন্ধরা।
বাম নেতা ক্ষিতি গোস্বামীর মেয়ে বসুন্ধরা গোস্বামীকে কলকাতা পুরভোটের প্রার্থী করে শুক্রবার রাতে চমক দিয়েছে শাসক দল তৃণমূল। ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের টিকিট পেয়ে বসুন্ধরার নাম দেখে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তার প্রেক্ষিতেই আনন্দবাজার অনলাইন-কে তিনি বলেন, ‘‘নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থানকে সব সময় স্যালুট করে এসেছেন বাবা।’’
বাম নেতার ঘরে জন্মালেও নিজে কোনও দিন বাম-রাজনীতি করেননি বসুন্ধরা। আর এখন তাঁর নেত্রী মমতা, যিনি বরাবর বাম-শাসনের বিরুদ্ধে লড়ে এসেছেন। এতে বাম-শিবিরের অস্বস্তিতে পড়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তাঁর বাবা বরাবরই মমতাকে শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখেছেন বলেই জানালেন পেশায় মনস্তত্ত্ববিদ বসুন্ধরা।
তাঁর কথায়, ‘‘বাবা-মামা-দাদা-কাকাদের হাত ধরে নয়, সম্পূর্ণ ভাবে নিজে লড়াই করে আজ এই জায়গায় এসে পৌঁছেছেন আমাদের নেত্রী। বাবা বরাবর তা বিশ্বাস করতেন।’’ বসুন্ধরা আরও বলেন, ‘‘বাম-শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের লক্ষ্য নিয়ে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল গঠন করেছিলেন মমতা। এই জন্য বাবা ওঁর প্রশংসাও করতেন।’’
২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর প্রয়াত হন আরএসপি নেতা ক্ষিতি। তার পরের বছরই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন বসুন্ধরা। কিন্তু কখনওই তাঁকে মাঠে-ঘাটে নেমে সক্রিয় রাজনীতি করতে দেখা যায়নি। সম্প্রতি তৃণমূলের মুখপত্রের উত্তর সম্পাদকীয় স্তম্ভে ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক প্রবন্ধে মমতাকে নিয়ে লেখা জন্য কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাসকে। সেই সময় অজন্তার সমর্থনে এগিয়ে এসে ঘাসফুল শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বের নজর কেড়েছিলেন বসুন্ধরা।
সেই সময় ক্ষিতি-কন্যা লিখেছেন, ‘‘সিপিএমের এই সব আচরণ বহু প্রতিভাকে বামফ্রন্টের স্রোত থেকে সরে যেতে বাধ্য করেছে। ওরা সবেতেই চক্রান্তের গন্ধ দেখে। বদনাম দেয়। তারপর শাস্তির পথে যায়। এই খেলা মানুষ ধরে ফেলেছেন। প্রকৃত বাম মনোভাবাপন্ন স্বাধীনতচেতা মানুষ কোনও অবস্থায় এটা মানবে না। এই করতে করতে বামফ্রন্টকে শূন্যে নামিয়েছে সিপিএম। তাতেও শিক্ষা হয়নি।’’
দেশের বর্তমান রাজনৈতির প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বসুন্ধরা বিশ্বাস করেন, ‘‘দেশের স্বার্থে বিজেপি-র বিরুদ্ধে আমাদের একজোট হওয়া প্রয়োজন।’’