সায়নদেব লিখেছেন, ‘যখন ওঁদের প্রয়োজন পড়েছিল তাঁর আত্মত্যাগ, তখন ওঁরা আশ্বস্ত করেছিলেন। যখন আত্মত্যাগ সারা— তখন ওঁরা বললেন, এখনও সময় আসেনি।’
কলকাতা পুরনির্বাচনের জন্য শুক্রবার রাতে প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করেছে তৃণমূল। সেই তালিকায় নাম না থাকায় ক্ষুব্ধ টুইট করলেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে সায়নদেব। শুক্রবার রাতেই টুইট করেন তিনি। সেখানে সায়নদেব লিখেছেন, ‘যখন ওঁদের প্রয়োজন পড়েছিল তাঁর আত্মত্যাগ, তখন ওঁরা আশ্বস্ত করেছিলেন। যখন আত্মত্যাগ সারা— তখন ওঁরা বললেন, এখনও সময় আসেনি।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘নীতিকথা— যত ক্ষণ না আপনার সময় আসছে, অন্যের জন্য হাততালি দিতে থাকুন।’ এ ব্যাপারে জানতে সায়নদেবের সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু যোগাযোগ করা যায়নি।
গত বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর আসন থেকে জিতেছিলেন সায়নের বাবা শোভনদেব। পরে তিনি বিধায়ক পদ ছেড়ে দেন। সেই আসন থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপনির্বাচনে জেতেন। শোভনদেব পরে খড়দহ থেকে উপনির্বাচনে লড়েন। এবং জিতে ফের বিধানসভায় যান। শুক্রবারই বকখালি ছুটি কাটাতে গিয়েছেন শোভনদেব। সেই রাতেই তৃণমূল প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করে। সায়নের টুইটও ওই রাতেই। ছেলের করা টুইট প্রসঙ্গে অবগত শোভনদেব। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘ওঁর টুইট নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। আমি কলকাতায় ফিরে সায়নের সঙ্গে কথা বলব। তার পর যা বলার বলব।’’
নতুন প্রজন্মের মুখ হিসেবে যে নেতা-নেত্রীদের ছেলেমেয়েরা তৃণমূলে এসেছেন, রাজনীতি করছেন— সায়নদেব তাঁদের মধ্যে অন্যতম। বাবার ছায়াসঙ্গী হিসেবেই দেখা যায় তাঁকে। রাসবিহারী-ভবানীপুর হয়ে খড়দহ, শোভনদেব যেখানেই প্রার্থী হয়েছেন, সেখানই সায়নদেবের সক্রিয় উপস্থিতি লক্ষ করা গিয়েছে। তাঁর ঘনিষ্ঠদের মতে, নিজের সক্রিয়তার কারণেই প্রার্থিপদের প্রত্যাশা করেছিলেন সায়নদেব।
প্রসঙ্গত, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে শোভনদেবকে রাসবিহারী কেন্দ্র থেকে সরিয়ে আনা হয়েছিল ভবানীপুরে। প্রথমে রাজি না হলেও, পরে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিলেন বর্ষীয়ান শোভনদেব। গত ২ মে ২৮ হাজার ভোটে ভবানীপুর থেকে জেতেন তিনি। সায়নদেব-ঘনিষ্ঠদের মতে, বার বার বাবার বিধানসভা কেন্দ্র বদল ও তাঁর পরিবারের আত্মত্যাগের কথাই টুইটে বোঝাতে চেয়েছেন তিনি।
এ বারের পুরভোটে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যর ছেলে সৌরভ বসু প্রার্থী হয়েছেন ৮৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। আর মন্ত্রী শশী পাঁজার মেয়ে পূজা পাঁজা ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হয়েছেন। সায়নদেব ছাড়াও, প্রার্থী হতে পারেননি মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের মেয়ে শ্রেয়া পাণ্ডে ও জোড়াসাঁকর প্রাক্তন বিধায়ক স্মিতা বক্সীর ছেলে সৌম্য বক্সী। তবে সায়নদেবের মতো এখনও পর্যন্ত তাঁরা কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।
শনিবার বিকেলে আরও একটি টুইট করেছেন সায়নদেব। সেই টুইটে তিনি তাঁকে নিয়ে তৈরি হওয়া যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটিয়ে জানিয়েছেন পুরভোটের শেষে মমতার জয়ের আনন্দেই সুবজ আবীর দিয়ে খেলা হবে।