Firhad Hakim

তৃণমূলের নবীন ও প্রবীণ বিতর্কে এ বার ফিরহাদও সরব, দু’দিক সামলে অন্য গোত্রে ফেললেন নিজেকে

সোমবার উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতিতে বয়ঃসীমা নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তার পরের দিনই এই একই বিষয়ে মত জানালেন ববি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:২৪
Share:

ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।

তৃণমূলের অন্দরমহলে শুরু হয়েছে নবীন-প্রবীণ বির্তক। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ রওনা হওয়া আগে দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ঠিক তার পর দিনই এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে মুখ খুললেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এই দ্বন্দ্বে তাঁর অবস্থান কোথায়? তা-ও নিজেই জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

ফিরহাদ বলেন, ‘‘মানুষের কাছে যাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তাঁকে প্রার্থী করা উচিত। সে প্রবীণ হলে প্রবীণ হবে, নবীন হলে নবীন হবে। আমি এখনও বলছি ডায়মন্ড হারবারে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মানুষ গ্রহণ করেছে, তাঁরাই থাকবেন।’’ এর পরেই তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘আমি নিজেকে মধ্যবয়স্ক বলি। আমি নিজে নবীন-প্রবীণের মাঝখানে রয়েছি।’’

প্রবীণরা কতটা মাঠে ময়দানে নেমে সক্রিয় থাকতে পারেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ফিরহাদ বলেন, ‘‘শোভনদা (মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়) খুবই কাজ করতে পারেন। মদনদাও (বিধায়ক মদন মিত্র) কাজ করতে পারেন। সৌগতদা যে ভাবে নিজের লোকসভা কেন্দ্রে কাজ করেন তা খুব কম জনপ্রতিনিধি করেন। আমরা তাঁর কাছে শিখি কী ভাবে নিজেদের নির্বাচনী কেন্দ্র সামলাতে হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রকাশ্যে আমাদের কারও এ বিষয়ে কথা বলা উচিত নয়। যা বলার বলা উচিত পার্টির অন্দরেই। সবার প্রয়োজন আছে দলে। মানুষের গ্রহণযোগ্যতাই শেষ কথা হওয়া উচিত।’’

Advertisement

সোমবার উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে অভিষেক বলেন, ‘‘আমি মনে করি, সব পেশার মতো রাজনীতিতেও একটা বয়ঃসীমা থাকা উচিত।’’ তবে পাশাপাশিই অভিষেক আরও বলেছেন যে, ‘‘দলের প্রবীণদের অভিজ্ঞতারও প্রয়োজন রয়েছে।’’ তৃণমূলের অন্দরে নবীন-প্রবীণ ‘দ্বন্দ্ব’ নিয়েও বলতে গিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘‘নবীন-প্রবীণ সবাইকে নিয়েই দল চলবে। প্রবীণদের অভিজ্ঞতা দলের প্রয়োজন। তবে কাজের জন্য দরকার তরুণদের। যতই হোক, বয়স বাড়লে কাজের ক্ষমতা কিছুটা হলেও কমে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অনেকেই যোগ্য লোকদের সামনে আসতে দেন না। সেটা ঠিক নয়।’’ উদাহরণ দিয়ে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, সমস্ত পেশাতেই অবসরের বয়ঃসীমা আছে। বয়সের ঊর্ধ্বসীমাও আছে। শুধু রাজনীতি কেন, ক্রিকেট, ফুটবল— সবেতেই অবসরের বয়স আছে।’’ তবে একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘যদি কেউ মনে করেন, যাঁদের বয়স ২০, ২৫ বা ৩০— তাঁরাই শুধু তৃণমূল করবে, তা হলে মনে রাখতে হবে, বিষয়টা সেটাও নয়।’’

তার পরেই ফিরহাদের এমন মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বাংলার রাজনীতির কারবারিরা। তবে দলের আরও একটি বিষয় নিয়েও নিজের মতামত জানিয়েছেন কলকাতা বন্দরের বিধায়ক। এক ব্যক্তি এক পদ নীতি প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেছেন, ‘‘দলে অনেক রকম কথা থাকে। তা নিয়ে আলোচনাও হয়। আমরা সবাই দলে নিজেদের মতামত জানাই। সেই গণতন্ত্র আমাদের দলে আছে। তার পর নির্ণয় নেন আমাদের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি যা ঠিক করবেন আমরা শৃঙ্খলাপরায়ণ সৈনিক সেটাই করব। এটা আলোচনার মধ্যে ছিল। এক এক জনের এক একটা থিয়োরি। দলে এটা থাকা উচিত। উপর থেকে কোনও জিনিস চাপিয়ে দেওয়া হয় না। তাই পার্টির ভিতরে যা আলোচনা হয় তা বাইরে কখনওই বলব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement