গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আগেই কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ বার পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বিধানসভা এলাকা বিন্যাসের ঘোষণাও করে দিল কেন্দ্র। বুধবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘‘পাক অধিকৃত কাশ্মীর হামারা হ্যায়।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জন্য জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় ২৪টি আসন আমরা সংরক্ষিত রেখেছি। কারণ ওটা আমাদের জায়গা।’’
শাহের এই ঘোষণার পরেই লোকসভার ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে জয়ধ্বনি উঠতে শুরু করে। বিজেপি সাংসদরা হাততালিতে সভা ভরিয়ে দেন। সেই সময়ে শাহ বলেন, ‘‘মনোনীত সদস্যদের তালিকায় পাক অধিকৃত কাশ্মীরের এক জন প্রতিনিধিকেও রাখা হচ্ছে। অর্থাৎ পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জন্য বিধানসভায় মোট ২৫ সদস্যের আসন সংরক্ষিত রাখা হচ্ছে।’’
এমনিতে এ বার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে যে সব বিল পেশ করা হচ্ছে তার মধ্যে গুরুত্বের বিচারে উপরের দিকেই রয়েছে ২০২৩ সালের জম্মু ও কাশ্মীর সংরক্ষণ (সংশোধনী) বিল এবং ২০২৩ সালের জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্বিন্যাস বিল। বুধবার আবার সেই বিল নিয়ে আলোচনায় লোকসভায় শাহ জানান, ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তার ফলে ভূস্বর্গের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। সে দিন জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের তরফে সঠিক পদক্ষেপ ছিল বলে ব্যাখ্যা দেন শাহ। সেই সঙ্গেই জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা এলাকা কেমন হবে তা-ও জানান তিনি।
জম্মু ও কাশ্মীরে সময় পার হয়ে গেলেও অনেক দিন থেকেই বিধানসভা নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই সেখানে ভোট হবে কি না সে বিষয়ে অবশ্য কোনও ইঙ্গিত দেননি শাহ। তবে তিনি বলেন, তিনি বলেন, ‘‘আগে জম্মুতে মোট ৩৭টি আসন ছিল। এখন ৪৩টি আসন হয়েছে। কাশ্মীরে আগে ৪৬টি আসন ছিল। এখন ৪৭ হয়েছে। আর পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের জন্য ২৪টি আসন আমরা সংরক্ষিত রেখেছি।’’ শাহ জানিয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় আগে মোট আসন ছিল ১০৭টি। এখন সেটা বেড়ে হচ্ছে ১১৪।
একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, আগে জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় মনোনীত সদস্যের সংখ্যা ছিল দুই। সেটা বেড়ে পাঁচ হবে। জম্মু ও কাশ্মীর আইনের ১৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী, দু’জন মহিলাকে মনোনীত করেন রাজ্যপাল। এখন অবশ্য ওই রাজ্যে লেফটেন্যান্ট গভর্নর রয়েছেন। শাহ বলেন, ‘‘এখন থেকে কাশ্মীরের দুই বাসিন্দাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। তাঁদের মধ্যে এক জন হবেন মহিলা। আর পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের এক জনকে মনোনয়নের জন্য আসন সংরক্ষিত রাখা হবে।’’
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস এবং জওহরলাল নেহরুর পদক্ষেপের নিন্দাও করেন শাহ। জানান, এই বিল কাশ্মীর ছেড়ে আসতে যাঁরা বাধ্য হয়েছিলেন তাঁদের অধিকার ফিরিয়ে দেবে। মনোনীত সদস্যের একটি পদ কাশ্মীরের উদ্বাস্তু পরিবারের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।