কেএলও প্রধান জীবন সিংহ। ফাইল চিত্র।
‘কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন’-এর (কেএলও) নেতা কৈলাস কোচের আত্মসমর্পণকে ‘নাটক’ বলে দাবি করলেন সংগঠনের প্রধান জীবন সিংহ। বৃহস্পতিবার কলকাতায় আত্মসমর্পণ করেন কৈলাস ওরফে কেশব রায়। সেদিন ধরা দেন তাঁর স্ত্রী স্বপ্না বর্মণ ওরফে জুবিলি কোচ। শুক্রবার সে ব্যাপারে অডিয়ো-বার্তা প্রকাশ করেন জীবন (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি)।
অডিয়ো-বার্তায় (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) জীবনকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘কেএলও-র সাধারণ সম্পাদক কৈলাস কোচের দেখা পেয়েছি টেলিভিশনের পর্দায়। কেএলও-কে হেয় প্রতিপন্ন করতে কৈলাসকে নিয়ে কলকাতার পুলিশ মিথ্যা নাটক করেছে।’’ তিনি দাবি করেন, “আগেই জানিয়েছি, বাংলাদেশ থেকে কৈলাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেখানে থেকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স কলকাতায় এনে তাঁকে গুপ্ত স্থানে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি ওই বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ তাঁকে সামনে আনতে বাধ্য হয়েছে। কৈলাসের গ্রেফতার ও তাঁর উপরে নির্যাতন সম্পূর্ণ মানবতাবিরোধী ও আইনবিরোধী।’’ তিনি আরও সংযোজন করেন, ‘‘কৈলাসকে গান-পয়েন্টে রেখে যে বক্তব্য দেওয়ানো হয়েছে তা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কোচ-কামতাপুরের মানুষের কাছে আমি আবেদন করছি, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এই মিথ্যে কথায় কান দেবেন না। কেউ বিচলিত হবেন না।’’
সম্প্রতি কেএলও জঙ্গিদের জন্য পুনর্বাসন প্যাকেজ ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। তার পরে, এই প্রথম কোনও জঙ্গি আত্মসমর্পণ করেছে। সংগঠনে এক সময় কৈলাসকে জীবনের পরেই মান্যতা দেওয়া হত। সেই কৈলাস রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয়ের পাশে বসে জানিয়েছেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র সমর্পণ করছেন। অন্য জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করার আহ্বানও জানিয়েছেন।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা দাবি করেছেন, ‘‘পুনর্বাসন প্যাকেজ নিয়ে অনেকেই আগ্রহী। আরও আত্মসমর্পণ করবেন।’’ এই বিষয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের অনুমান, সে দাবি যদি সত্যি হয়, আবার নতুন করে কেএলও-র মধ্যে বিভাজনের সম্ভাবনা তৈরি হবে।
জীবন-ঘনিষ্ঠরা অবশ্য এই নিয়ে দাবি করেছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সম্ভাব্য পদক্ষেপ আঁচ করে গত মার্চ মাসে গঠিত কেএলও-র নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে কৈলাসকে আগের মতো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। দলের সাংগঠনিক কাঠামোয় অসম থেকে আসা নেতাদের গুরুত্ব বাড়ানো হয়েছিল। সংগঠনের অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান দেবজিৎ সিংহ কোচ প্রাক্তন আলফা সদস্য। তিনি এবং দলের বিদেশ সচিব তথা অ্যাকশন স্কোয়াডের নেতা পাভেল কোচ— এরা দু’জনেই অসমের লোক।