Justice for RG Kar in Vishwakarma Puja Day

আরজি কর-কাণ্ডে বিচার চেয়ে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন হবে আকাশ দখল, কালো ঘুড়ি দিয়ে উড়বে স্লোগান

১৪ অগস্ট রাতে অসংগঠিত ভাবেই রাত দখলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সে ভাবেই বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ঘুড়ি উড়িয়ে বিচারের দাবিতে সরব হওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছে সমাজমাধ্যমে।

Advertisement

অমিত রায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৩
Share:

বিশ্বকর্মা পুজোর দিন আকাশে দেখা যাবে এ রকম ঘুড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে যুবতী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল দেশের রাজনীতি। ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ স্লোগানে মুখরিত হচ্ছেন কলকাতা-সহ রাজ্যবাসী থেকে দেশ-বিদেশের ভারতীয়েরা। স্বাধীনতা দিবসের উৎসবের রাতে ত্রিবর্ণ পতাকার সঙ্গে বাংলার মানুষ উড়িয়েছিল প্রতিবাদের ধব্জা। সেই আন্দোলনে শামিল হয়েছে নাগরিক সমাজ থেকে শুরু করে দেশের প্রান্তিক জনতাও। এ বার সেই প্রতিবাদের ভাষা মিশে যেতে চলেছে বাঙালির একটি পার্বনেও। প্রতি বছর ভাদ্র সংক্রান্তিতে হয় বিশ্বকর্মা পুজো। এ বার সেই পুজোয় ঘুড়ি উড়িয়ে আরজি করের ঘটনায় বিচার চেয়ে সরব হবেন ঘুড়িপ্রেমীরা।

Advertisement

এক সময়ে বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে ঘুড়িতে ঘুড়িতে ছেয়ে যেত বাংলার আকাশ। কিন্তু দিনবদলের সঙ্গে সঙ্গে হাতে স্মার্টফোনধারী বাঙালি যুবকেরা হারিয়েছেন ঘুড়ি ওড়ানোর আগ্রহ। কিন্তু ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ স্লোগানকে সামনে রেখে ফের ঘুড়ি উড়িয়ে প্রতিবাদের ঝড় তুলতে চায় কলকাতা। ১৪ অগস্ট রাতে অসংগঠিত ভাবেই রাত দখলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সে ভাবেই বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ঘুড়ি উড়িয়ে বিচারের দাবিতে সরব হওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছে সমাজমাধ্যমে। এই বিচারের দাবি তুলেই ঘুড়ি উড়িয়ে প্রতিবাদ এবং বিচার চাওয়ার স্বরও মিলে গিয়েছে সমাজমাধ্যমেই।

—নিজস্ব চিত্র।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী মঙ্গলবার ভোর থেকেই কলকাতার সব প্রান্তে উড়বে প্রতিবাদের এই ঘুড়ি। কোনও ঘুড়িতে লেখা থাকবে, ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’, আবার কোনও ঘুড়িতে মোমবাতির ছবি দিয়ে লেখা থাকবে, ‘বিচার পাক অভয়া’। যে হেতু ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় এই বিচারের দাবি তোলা হচ্ছে, তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঘুড়ির রং রাখা হয়েছে কালো। সেই কালো রংয়ের ঘুড়িতেই সাদা রং দিয়ে বিচারের দাবি লেখা হয়েছে।

Advertisement

উত্তর কলকাতার সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের ‘ইন্ডিয়া কাইটস’ দোকানে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এক পক্ষকাল আগে এই ধরনের অল্প ঘুড়ি তৈরি করা হয়। দোকানে ঘুড়ি ঝুলতে দেখেই প্রতিবাদীরা তা কিনতে আগ্রহী হয়েছেন বলেই জানাচ্ছেন, দোকানের মালিক অজিত দত্ত। তাঁর কথায়, ‘‘আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা কয়েকটি ঘুড়ি তৈরি করেছিলাম। ধীরে ধীরে সেই ঘুড়ির চাহিদা বেড়েছে, রবিবার রাত পর্যন্ত প্রায় এই ধরনের ৬০০টি ঘুড়ি আমরা বিক্রি করেছি। আমাদের কাছে আর হাতেগোনা কয়েকটি ঘুড়ি পড়ে আছে।’’ অজিত আরও বলেন, ‘‘ঘুড়ির ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে যেটুকু বুঝেছি তা হল, পুজো হোক বা উৎসব, নিহত ডাক্তার বোনের বিচারের দাবিতে তারা সরব থাকতে চায়।’’ প্রতিটি ঘুড়ির দাম ১৫ টাকা।

—নিজস্ব চিত্র।

আবার ‘ফ্রিডম কাইট ক্লাব’ নামে একটি সংস্থা রবিবার বিচারের দাবিতে তৈরি ঘুড়ি বিতরণ করেছে। তাদের বিতরণ করা ঘুড়িও রয়েছে হরেক রকমের বিচারের দাবিতে স্লোগান। একটি স্লোগানে লেখা হয়েছে, ‘লক্ষ কণ্ঠে একই স্বর, বিচার চায় আরজি কর’, কোনও স্লোগানে আবার লেখা হয়েছে, ‘উৎসব হোক আন্দোলনের’। কোথাও আবার স্লোগানে উঠে এসেছে ‘উৎসব হোক ন্যায়বিচারের’। এক কথায়, ভাদ্র সংক্রান্তিতে বাঙালির রান্নাপুজো এবং বিশ্বকর্মা পুজোয় এ বার লাগতে চলেছে প্রতিবাদের রং।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement