ফাইল চিত্র
তিনি কি কুতুবুদ্দিন গাজি? না, পরেশ রায়? কিংবা তিনি কি একই অঙ্গে কুতুব-পরেশ? সূচনায় ছিল ইটভাটার ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগ। তাঁকে উদ্ধারের পরে কসবা কাণ্ডের তদন্তে ক্রমে ক্রমে উঠে আসা অন্য তত্ত্বে বড় হয়ে উঠছে এই নাম-ধাঁধা।
বুধবার দুপুরে কসবার শান্তিপল্লি থেকে কুতুবুদ্দিন গাজি নামে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় বৃহস্পতিবার ভোরে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার পুলিশ জানিয়েছে, অপহৃত ব্যবসায়ী কুতুবুদ্দিনের বিরুদ্ধেও প্রতারণার অভিযোগ মিলছে। তিনি কলকাতার অন্তত তিনটি জায়গায় নাম ভাঁড়িয়ে এবং ভুয়ো অফিস খুলে প্রতারণার ব্যবসা চালাচ্ছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
কুতুবুদ্দিন তাদেরও ঠকিয়েছেন বলে ধৃতেরা পুলিশকে জানিয়েছে। গ্রেফতারের আগে পর্যন্ত ধৃতেরা জানত, তারা ব্যবসায়ী পরেশ রায়কে অপহরণ করেছে। পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, কুতুবুদ্দিনের নামে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ এলে তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ, অন্তত ৪০ জনকে প্রতারণা করে কুতুবুদ্দিন হাতিয়েছেন প্রায় দেড় কোটি টাকা।
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, প্রতারণার অভিযোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিতে পরেশ রায়ের নাম রয়েছে। ওই নথিতে থাকা সংস্থার নামের সঙ্গে কুতুবুদ্দিনের সংস্থারও নামও মিলে গিয়েছে। তা থেকেই সন্দেহ করা হচ্ছে, পরেশ ও কুতুবুদ্দিন একই ব্যক্তি। পুলিশ জানিয়েছে, মূলত দুষ্প্রাপ্য চাল, প্রাচীন ধাতু, চুম্বক ইত্যাদির নাম করেই প্রতারণা করা হত বলে অভিযোগ। গোটা দেশে এই ধরনের অনেক চক্র সক্রিয়। পুলিশ জেনেছে, চিনার পার্ক, পিকনিক গার্ডেনে কুতুবুদ্দিনের অফিস খোলা হয়েছিল। ওই দুই এলাকার থানায় কোনও অভিযোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে লালবাজার। তদন্তকারীদের দাবি, যে-ইটভাটাটি নিজের বলে কুতুবুদ্দিন দাবি করেছেন, সেটির আসল মালিক নাকি তাঁর দাদা।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার দুপুরে জনা দশেক যুবক কসবার শান্তিপল্লি থেকে কুতুবুদ্দিনকে অপহরণ করে। পরে কুতুবুদ্দিনের বন্ধু এবং ‘ব্যবসার অংশীদার’ রেহান কুরেশি পুলিশে খবর দেন। রেহান বসিরহাট মহকুমার তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু শাখার নেতা। তাঁর অভিযোগ আসার পরেই লালবাজার সক্রিয় হয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কুতুবকে উদ্ধার করে।