(বাঁ দিকে) লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। কল্যাণের পাঠানো সেই ইমেল (নীচে)। — ফাইল চিত্র।
ওয়াকফ বিল নিয়ে গঠিত সংসদীয় যৌথ কমিটির (জেপিসি) পাঁচ রাজ্যের সফর নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে ইমেল করলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশ্ন তুললেন, ৩১ জন সদস্যের কমিটির মাত্র পাঁচ জনকে নিয়ে কী ভাবে শুরু হতে পারে সফর?
শনিবার স্পিকারকে পাঠানো ওই চিঠিতে কল্যাণ লিখেছেন, ‘‘আমরা বিরোধী দলের সদস্যেরা জেপিসি-র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ নিয়ে গত ৫ নভেম্বর আপনার সঙ্গে দেখা করেছিলাম। আমাদের কথা শোনার পর আপনি আমাদের বক্তব্যের সঙ্গে সহমতও পোষণ করেছিলেন। আমরা ভেবেছিলাম, ৯ তারিখের সফর বাতিল করা হবে। কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম, সফর তো বাতিল হলই না, বরং মাত্র পাঁচ সদস্যের দল নিয়ে গুয়াহাটিতে বৈঠক হল!’’ এর পরেই জেপিসি-র চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পালের দিকে আঙুল তুলেছেন কল্যাণ। কল্যাণের দাবি, চেয়ারম্যানের এই অসংবেদনশীল আচরণ শুধু একটি সংসদীয় কমিটির কার্যক্রমকে ‘ব্যঙ্গ’ করাই নয়, সাংবিধানিক নীতিরও বিরোধী। চিঠির শেষে লোকসভার ‘অভিভাবক’ হিসাবে ওমকে এ বিষয়ে ফের নজর দিতে অনুরোধ করেছেন কল্যাণ।
শনিবার এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কল্যাণ বলেন, ‘‘এই সফর পাঁচটি শহরে আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৩১ জন জেপিসি সদস্যের পরিবর্তে সেখান উপস্থিত হয়েছেন মাত্র পাঁচ জন! এর থেকে লজ্জার আর কিছু হয় না।’’
বৃহস্পতিবারই বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ভুক্ত দলগুলি ওয়াকফ বিল নিয়ে গঠিত সংসদীয় যৌথ কমিটির পাঁচ রাজ্যের সফর বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কলকাতায় আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই ঘোষণা করেছেন ওয়াকফ সংক্রান্ত জেপিসির অন্যতম সদস্য তথা শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ। শনিবার গুয়াহাটি থেকে সফর শুরু করেছে জেপিসি। এর পর ছ’দিন ধরে দেশের পাঁচ রাজ্যের পাঁচটি শহরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করবেন জেপিসির সদস্যেরা। এই তালিকায় কলকাতা রয়েছে। তা ছাড়া, রয়েছে ভুবনেশ্বর, পটনা এবং লখনউও।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৩ নভেম্বরও ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়ে জেপিসির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ করেছিলেন বিরোধী সাংসদেরা। কল্যাণদের দাবি ছিল, সপ্তাহে দু’দিন ৯ ঘণ্টা করে জেপিসির বৈঠক হচ্ছে, সাংসদেরা অন্য কোনও কাজই করতে পারছেন না। কল্যাণের আরও দাবি, স্পিকার তাঁদের সব অভিযোগ সহানুভূতির সঙ্গেই শুনেছিলেন। আশ্বাস দিয়েছিলেন, মিটিংয়ের সময় কমানো এবং সফর বাতিলের বিষয়টি তিনি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন। কিন্তু তেমনটা হয়নি। শনিবারের ইমেলেও সেই ক্ষোভই উগরে দিয়েছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ। প্রসঙ্গত, এর পরেই ওই সফর বয়কটের কথা ঘোষণা করেছিলেন কল্যাণেরা। সফর বয়কট করেছিল কংগ্রেস, ডিএমকে, শিবসেনা (উদ্ধব), এনসিপি (পওয়ার), জেএমএম-সহ ইন্ডিয়া জোটের একাধিক দল।