ছবি: সংগৃহীত
বিজেপির দলীয় পতাকা ও নির্বাচনী প্রচারের ফেস্টুন পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে ওই অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের মহাদেবপুর এলাকায়।
বিজেপির অভিযোগ, এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ দলীয় কর্মীরা মহাদেবপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া জমিতে শতাধিক পুড়ে যাওয়া পতাকা ও প্রচারের ফেস্টুন দেখতে পান। ওই ঘটনার পিছনে তৃণমূলের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তুলে বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশ বিক্ষোভ শুরু করেন। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন উত্তর দিনাজপুরের জেলা বিজেপি সভাপতি নির্মল দাম। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ নির্মলের নেতৃত্বে দলের নেতা-কর্মীরা মহাদেবপুরে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। দেড়ঘণ্টা অবরোধ চলার পরে পুলিশের আশ্বাসে তা ওঠে। বিজেপির তরফে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এ নিয়ে রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমারের বক্তব্য, ‘‘তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করব না।’’
জেলা বিজেপি সভাপতির অভিযোগ, ‘‘যেখানে যেখানে সন্ত্রাসের আশঙ্কা রয়েছে, সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখা মিলছে না। পুলিশ বাহিনীকে থানায় বসিয়ে রেখেছে।’’
এ নিয়ে উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকার যেখানে যেখানে প্রয়োজন, সে সব জায়গায় ঘুরেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বিজেপি সংবাদমাধ্যমকে না বলে পুলিশকে জানাক। বাহিনীকে সেই সব জায়গাতেই টহলে পাঠানো হবে।’’
এ বিষয়ে জানতে জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনি আধিকারিক অরবিন্দকুমার মিনাকে ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। জবাব দেননি এসএমএসেরও।
২৫ নভেন্বর কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। ওই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী করেছে জেলা পরিষদের সদস্য কমল সরকারকে। গত লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের মহাদেবপুর ও পাশের সারাই বুথ মিলিয়ে বিজেপি তৃণমূলের থেকে প্রায় এক হাজার ভোট বেশি পেয়েছে। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতও বিজেপি দখল করে। নির্মলের দাবি, লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ২৭টি বুথে বিজেপির সংগঠন শক্তিশালী হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘উপনির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূলের পরাজয় নিশ্চিত। তা বুঝতে পেরেই শুক্রবার গভীর রাতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মহাদেবপুরে বিজেপির পতাকা, ফেস্টুন পুড়িয়েছেন।’’ নির্মল জানান, মহাদেবপুর ও সারাই বুথ এলাকায় দলের নির্বাচনী প্রচারে ওই পতাকা, ফেস্টুন লাগানো হয়েছিল।
জেলা বিজেপি সভাপতির অভিযোগ, ‘‘ওই পঞ্চায়েত এলাকায় জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি গৌতম পালকে নির্বাচনী প্রচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর মদতেই ওই ঘটনা ঘটেছে বলে সন্দেহ।’’
কালিয়াগঞ্জে নির্বাচনের তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানির দাবি, ‘‘বিজেপির এনআরসি নীতির প্রতিবাদে বাসিন্দারা উপনির্বাচনে তৃণমূলকে জয়ী করবেন। বাসিন্দাদের সহানুভূতি কাড়তে বিজেপি নিজেরাই নিজেদের দলীয় পতাকা ও ফেস্টুন পুড়িয়ে তৃণমূল ও গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।’’