সাংবাদিক বৈঠকে কবীর সুমন।
সাংবাদিককে কটূক্তি করা নিয়ে বিতর্কে এই প্রথম কবীর সুমন তাঁর ফেসবুকের বন্ধু তালিকার গণ্ডি ছেড়ে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন। এই প্রথম প্রকাশ্যে নিজেকে ‘নির্দোষ’ প্রমাণ করার কথাও বললেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টেয় নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন সুমন। ফেসবুকের মাধ্যমেই তিনি সেই সাংবাদিক বৈঠকে ‘সাংবাদিক বন্ধুদের আহ্বান’ জানিয়েছিলেন।
তবে সেটি ‘সাংবাদিক বৈঠক’ হয়নি। কারণ, সুমন কোনও প্রশ্ন নেননি। একটি স্পাইরাল নোটবইয়ের পাতায় পেনসিলে এক পাতা বিবৃতি লিখে এনেছিলেন। সেটাই তিনি বিলি করে দেন। সেখানে যা লিখেছেন সুমন, তার মোদ্দা কথা— তিনি একটি বেসরকারি চ্যানেলের সাংবাদিককে টেলিফোনে কিছু কথা বলেছিলেন। সেগুলি তিনি কোনও মঞ্চ থেকে বলেননি, কোনও প্রকাশ্য সভায় ঘোষণা করেননি, কোনও তৃতীয় ব্যক্তির সামনেও বলেননি।
অর্থাৎ, তিনি কথাগুলি এক ব্যক্তিকে বলেছিলেন। যিনি বলেননি, ওই কথোপকথন তিনি রেকর্ড করছেন এবং রেকর্ডিংটি তিনি নেটমাধ্যম বা অন্য কোথাও প্রকাশ করবেন। সুমন বলেছেন, তিনি ওই কথোপকথন রেকর্ড করা হচ্ছে বলে জানতেন না। সুমন লিখেছেন, ‘আমি যা যা বলেছিলাম, সব ওই ব্যক্তিকে, টেলিফোনে।’
বিবৃতিতে সুমন লিখেছেন, ‘এই কথাটা সংবাদমাধ্যমের সামনে বলার জন্য এই সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছি। এই প্রসঙ্গে বা অন্য কোনো প্রসঙ্গে কোনও প্রশ্ন আমি নেব না। আপনারা এসেছেন। এ জন্য ধন্যবাদ। নমস্কার। ভাল থাকবেন।’
সুমনের মঙ্গলবারের বিবৃতিতে স্পষ্ট, সুমন জানতেন না ওই কথোপকথন রেকর্ড করা হচ্ছে। যা সুমন সরাসরি বলেননি (প্রশ্ন করলেও নেননি), রেকর্ড করা হচ্ছে জানলে তিনি ওই ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রসঙ্গত, সুমন ওই কথোপকথনের শেষে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে বলেছিলেন, ‘‘ব্রডকাস্ট কর!’’ অর্থাৎ, তিনি সেটি প্রচার করতে পারেন।
‘ব্রডকাস্ট’ শব্দের অর্থ ‘প্রচার’। সেখানে মাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ নয়। অর্থাৎ, সুমন যখন সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে বলেছিলেন, ‘‘ব্রডকাস্ট কর!’’ তখন তিনি ‘প্রচার’ করার কথাই বলেছিলেন। সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক কথোপকথনটি ‘প্রচার’ করেছেন।
মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকের শেষে অন্য প্রশ্ন না-নিতে চাইলেও সুমন উপস্থিত সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘আমাকে দোষী প্রমাণ করার আইন যেমন আছে, তেমনই আমার সৌভাগ্য যে, এই দেশেই আমাকে নির্দোষ প্রমাণ করার আইনও রয়েছে।’’
বেসরকারি চ্যানেলের এক সাংবাদিকের সঙ্গে টেলিফোনে সুমনের কথোপকথন নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। সুমন ফেসবুকে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন। কিন্তু পাশাপাশিই বলেছেন, দরকার হলে তিনি আবার ওই একই ব্যবহার করবেন।