সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি মান্থা রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ফাইল চিত্র
দাড়িভিটের ছাত্রদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা সোমবার বললেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আজও আর্থিক সাহায্য করেনি রাজ্য। এর জন্যও যদি হাই কোর্টকে নির্দেশ দিতে হয়, তবে আর কিছু বলার নেই!’’
৫ বছর আগে দাড়িভিটের স্কুলে বিজ্ঞান এবং বাংলার শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধেছিল ছাত্রদের। সেই ঘটনায় ২ ছাত্রের মৃত্যু হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। যদিও পুলিশ ওই অভিযোগ অস্বীকার করে। ঘটনার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকেও রিপোর্ট দিতে বলা হয়। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি মান্থা এ ব্যাপারে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিচারপতির বলেছেন, ‘‘কমিশন জেলার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে এতটাই ভরসা করেছে যে তাঁদের রিপোর্ট দেখেই দায়িত্ব শেষ করেছে। এতেই বোঝা যায় কমিশন কতটা উদাসীন ছিল।’’
দাড়িভিটের ঘটনায় সোমবারই শেষ হয়েছে মামলার শুনানি। তবে রায়দান স্থগিত রেখেছে হাই কোর্ট। যদিও বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকে নিয়ে একের পর এক মন্তব্য করেছেন। বিচারপতি বলেন, ‘‘২০২০ সালে কমিশনের সদস্য ছিল না বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু ঘটনাটি তো ঘটেছিল ২০১৮ সালে। ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দুটো বছর কমিশন কী করেছে?’’
দাড়িভিটের ঘটনায় কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনও গিয়েছিল ঘটনাস্থলে। বিচারপতি সেই প্রসঙ্গ তুলেও রাজ্যের কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় কমিশন ওই জায়গায় গিয়ে রিপোর্ট তৈরি করে ফেলেছে। যদিও এখন সেই রিপোর্ট নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। তবু মনে রাখতে হবে তারা অন্তত রিপোর্ট তৈরি করেছে। কিন্তু আপনারা কী করেছেন?’’
সোমবার এই মামলার তদন্তে গ্রামের লোক অসহযোগিতা করেছে বলে বিচারপতি মান্থার এজলাসে পাল্টা যুক্তি দিয়েছিল রাজ্য। সে কথা শুনে বিচারপতি মান্থার প্রশ্ন, ‘‘তদন্তকারী অফিসারেরা কি আদৌ অভিযোগকারীদের কাছে গিয়েছিলেন? কোনও নথি অন্তত সে কথা বলছে না। গ্রাম আর পরিবার দুটো আলাদা জিনিস।’’