কলকাতা হাই কোর্ট। — ফাইল চিত্র।
যোগ্য প্রার্থী বঞ্চিত। কম নম্বর পেয়েও চাকরি পেয়েছেন অন্য প্রার্থী। স্কিল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর কাছে এই নিয়ে হলফনামা তলব করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।
উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের বাসিন্দা তারিফ আলি ২০১২ সালে রিজিওনাল লেভেল সিলেকশন টেস্ট (আরএলএসটি) দিয়েছিলেন। ভূগোলে শিক্ষকতা করতে চেয়েছিলেন তিনি। এসএসসির মেধা তালিকায় স্থানও পেয়েছিলেন। মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরীর অভিযোগ, মেধা তালিকায় স্থান পেয়েও নিয়োগপত্র পাননি তাঁর মক্কেল। তথ্যের অধিকার আইনে (আরটিআই) এসএসসির কাছে আবেদন জানিয়ে জিজ্ঞেস করেন, তাঁর প্রাপ্ত নম্বর কত? ২০২৩ সালের জুন মাসে এসএসসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৫২। কিন্তু তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতার উপর নির্ভর করে যে মূল্যায়ন হয়েছিল, তাতে দু’নম্বর কমিয়ে দেওয়া হয়। তারিফের দাবি, সঠিক মূল্যায়ন হলে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর হত ৫৪।
এসএসসির বিজ্ঞপ্তিতে আরও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, যাঁরা স্নাতকস্তরে ৫০ শতাংশের বেশি নম্বর পাবেন, তাঁরা স্নাতকের ১৪ নম্বরের মধ্যে ১২ নম্বর পাবেন। স্নাতকে ৬০ শতাংশের উপর যাঁদের নম্বর, তাঁরা ১৪ পাবেন। অভিযোগ, মামলাকারী তারিফ স্নাতকস্তরে ৫০ শতাংশ নম্বরের পেলেও তাঁকে ১২ নম্বরের পরিবর্তে ১০ দেওয়া হয়েছে। এসএসসির তরফে সঠিক নম্বর দিলে তার প্রাপ্ত নম্বর হত ৫৪।
মামলাকারী এসএসসির কাছে সমস্ত নথি-সহ লিখিত অভিযোগে জানান। তাতে জানান, একই মেধা তালিকায় ৫২.৩৩ নম্বর পেয়েও নিয়োগ পত্র পেয়ে চাকরি করছেন প্রার্থী। অথচ তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৫৪ হওয়া সত্ত্বেও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তাঁর অভিযোগের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি এসএসসি। বিচারপতি বসুর মন্তব্য, ‘‘এটা এসএসসির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, কারণ একাডেমিকসে নম্বর কি ভাবে কমে যায়? এক জন যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চিত করে কেন অন্য এক জনকে চাকরি দিল?’’ বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে এসএসসির আইনজীবী জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বেশ কিছু সময় লাগবে। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু নির্দেশ দেন, মামলাকারীর অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে দেখে হলফনামা জমা দেবে এসএসসি। জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে মামলার পরবর্তী শুনানি।