কেঁদে ফেললেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মান্না।
অপরাধ করলে তাঁর কাছে ক্ষমা নেই। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দোর্দণ্ডপ্রতাপ বলেই চেনেন তাঁকে কাছ থেকে দেখা মানুষজন। সেই বিচারপতির চোখে জল! সোমবার কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে গিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে ফেললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
বিচারপতি হঠাৎ হাসপাতালে কেন? জানা গেল এক চিকিৎসাধীন কলেজ ছাত্রীকে দেখতে এসেছেন তিনি। সম্প্রতি ট্রেন দুর্ঘটনায় দু’টি পা কেটে বাদ দিতে হয়েছে ওই ছাত্রীর। কলেজ যাওয়ার পথে তাঁর দুর্ঘটনাগ্রস্ত হওয়ার খবর সংবাদ মাধ্যমে পড়েই তাঁকে দেখতে আসেন বিচারপতি। কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। বিচারপতি হাই কোর্ট থেকে সোজা চলে আসেন সেখানেই। ছাত্রীর সঙ্গে দেখে করে তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। সেখানেই ছাত্রীর বিষয়ে বলতে গিয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি। প্রকাশ্যেই এক রকম ফুঁপিয়ে কেঁদে ফেলেন বিচারপতি।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত ছাত্রীর নাম সুনীতা বর্মা। বাড়ি হুগলির চাঁপদানির বিএম রোডে। মহাদেবানন্দ মহাবিদ্যালয়ের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্রী সুনীতা গত বৃহস্পতিবার পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হন। পলতা স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করার সময় ভিড়ের ধাক্কায় পা ফসকে যায় তাঁর। স্টেশন আর ট্রেনের মাঝে আটকে যায় পা। শেষে তাঁকে উদ্ধার করা গেলেও তাঁর পা দু’টি কেটে বাদ দিতে হয়। সোমবার তাঁকে দেখতে গিয়ে বিচারপতি বলেন, ‘‘ওই ছাত্রীর পাশে আমরা সবাই রয়েছি। সব রকম সাহায্য করব। কৃত্রিম ভাবে পা লাগানো যায় কিনা চিকিৎসকদের কাছে আবেদন করেছি।’’ তবে একই সঙ্গে বিচারপতি বলেন, ‘‘এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানবিক তিনিও নিশ্চয় বিষয়টি দেখবেন।’’
উল্লেখ্য, হুগলির ওই ছাত্রীর বাবা নেই। বাড়িতে মা এবং ভাই রয়েছে। পড়াশোনায় বরাবরই মেধাবী এই ছাত্রী। তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সোমবার ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গেও একান্তে কথা বলেন। আরজি কর হাসপাতালের সুপারের সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন বলে জানা গিয়েছে।