হালিশহর এবং কাঁচরাপাড়ার যে কাউন্সিলরেরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছিলেন, তাঁরা ফিরে গিয়েছেন পুরনো দলে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের তিন তৃণমূল সদস্যও বিজেপি ঘুরে ফের আগের দলে যোগ দিয়েছেন। এই আবহে রবিবার কলকাতার হেস্টিংসে বিজেপির নতুন কার্যালয়ে (রাজ্য দফতর নয়) অন্য দল থেকে যোগদান কর্মসূচি বাতিল করতে হল মুকুল রায়কে। বিজেপি সূত্রের খবর, দলের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষের নির্দেশেই মুকুলবাবু ওই কর্মসূচি বাতিল করেন।
মুকুলবাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘আমার সঙ্গে এ বিষয়ে দিলীপবাবুর কোনও কথা হয়নি। আমার শরীরটা একটু খারাপ হয়েছে। জ্বর এসেছে, সুগার বে়ড়েছে। তাই আজ ওই কর্মসূচিতে যেতে পারিনি।’’ যদিও এই বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে দিলীপবাবু বলেছেন, ‘‘হেস্টিংসে যোগদান কর্মসূচির কথা শুনে আমি বলেছি, যোগদান জেলা নেতৃত্বকে জানিয়ে জেলা কার্যালয়ে করা উচিত। রাজ্য স্তরের কেউ হলে প্রদেশ দফতরে যোগদান করানো উচিত। হেস্টিংসে কেন হবে?’’
বিজেপির একাংশের বক্তব্য, লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম মুকুলবাবুর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে গেরুয়া শিবিরে ‘বিদ্রোহ’ হয়েছিল। দলের একাংশের চাপেই মনিরুলকে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে নিষেধ করে দেন বিজেপি নেতৃত্ব। হালিশহর, ও কাঁচরাপাড়ার অভিজ্ঞতার পরে সেই মুকুলবাবুর ভূমিকা নিয়ে দলে আরও প্রশ্ন উঠেছে। তারই প্রভাব পড়েছে এ দিন হেস্টিংসে যোগদান কর্মসূচিকে ঘিরে ঘটা ঘটনায়।
তৃণমূল-সহ নানা দলের ভবানীপুর এলাকার বেশ কিছু কর্মীর এ দিন হেস্টিংসে বিজেপির নতুন কার্যালয়ে গিয়ে দল বদল করার কথা ছিল। দলীয় সূত্রের খবর, দিলীপবাবু তাতে বাধ সাধেন। তাঁর যুক্তি ছিল, কাউকে দলে যোগদান করাতে হলে সংশ্লিষ্ট স্তরের নেতৃত্বকে জানিয়ে জেলা বা রাজ্য দফতরে অনুষ্ঠান করতে হবে। দলের নিয়ম সর্বোচ্চ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে বুথ কর্মী— সকলকেই মানতে হবে। বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, সংশ্লিষ্ট জেলা সংগঠনকে না জানিয়ে শুধু মুকুলবাবুর ভরসায় কাউকে দলে নিলে ‘বেনোজল’ ঢোকার আশঙ্কা বেশি। তাই এ দিন তাঁকে হেস্টিংসের যোগদান কর্মসূচি করতে বারণ করেছেন দিলীপবাবু। যদিও মুকুলবাবু এমন কথা মানতে নারাজ।