টেট পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন করার সুযোগ পাবেন পরীক্ষার্থীরা। প্রতীকী চিত্র।
টেট পরীক্ষায় স্বচ্ছতা বজায় রাখার লক্ষ্যে পদক্ষেপ করল পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পর্ষদ। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরি পেতে যাঁরা ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর ‘টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট’ (টেট)-এ অংশগ্রহণ করেছিলেন, সেইসব পরীক্ষার্থীরা চাইলেই নিজেদের উত্তরপত্র যাচাই করার সুযোগ পাবেন। কী ভাবে সেই আবেদন জানাতে হবে, তাও উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। পর্ষদের একটি পোর্টাল মারফত চাকরি প্রার্থীদের আবেদন করতে হবে। পোর্টাল ছাড়াও একটি ওয়েবসাইটের উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে এই আবেদন করা যাবে।
আগামী ৩ মার্চ বিকেল ৫টা থেকে ১০ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত উত্তরপত্র যাচাই করার আবেদন জানানো যাবে। তবে এ জন্য সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীকে ১০০০ টাকা খরচ করতে হবে। পুরো পদ্ধতিই হবে অনলাইনে। পর্ষদের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি রুখতে বদ্ধপরিকর। তাই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যাতে কোনও প্রশ্ন না ওঠে, তাই আগে থেকেই এই ধরনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছ ভাবে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ সম্ভব বলেই পর্ষদ মনে করছে।’’ শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যে দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে, সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাইছে না রাজ্য সরকার। সেই কারণেই উত্তরপত্র যাচাইয়ের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছে শিক্ষামহলের একাংশ।
যদিও রাজ্য সরকারের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘সরকার যদি সত্যি নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে চাইত, তাহলে ইন্টারভিউতে ১০ নম্বর রাখত না। আসল দুর্নীতি তো এখন ওখানেই হওয়ার সুযোগ আছে।’’ পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অশোক রুদ্র বলেন, ‘‘কোনও প্রার্থীর মনে যদি পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কোনও সংশয় তৈরি, তা হলে এই পদ্ধতিতে সহজেই যাচাই করে নেওয়া যাবে। যাঁরা ইন্টারভিউ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তাঁদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে তাঁদের বামফ্রন্ট জমানায় টেট ছিল না। জেলা প্রাথমিক সংসদ থেকে পরীক্ষা নেওয়া হত। তখনও ইন্টারভিউতে ১০ নম্বর করেই থাকত। আর ফলাফল প্রকাশের পর দেখতে পেতাম বহু স্বনামধন্য সিপিএমের ক্যাডাররা প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পেয়েছেন।’’