বাবুঘাটে গঙ্গা আরতির সূচনা পর্বের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বাজেকদমতলা ঘাটে ফিরহাদ হাকিম। নিজস্ব ছবি।
মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে তাঁর বক্তব্য প্রকাশের পর নিন্দার ঝড় উঠেছে। কিন্তু নিজের বক্তব্যে অনড় থেকে আবারও তোপ দাগলেন ফিরহাদ হাকিম। মঙ্গলবার বিকেলে বাজেকদমতলা ঘাটে গঙ্গা আরতির সূচনাপর্বের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি দেখতে এসেছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন সতীর্থ মেয়র পারিষদ তারক সিংহ ও দেবাশিস কুমার। সোমবার বিধাননগরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে আশ্রয় প্রকল্পে নতুন বাড়ির উদ্বোধন করতে গিয়ে ডিএ প্রসঙ্গে সরকারি কর্মীদের দাবিদাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কলকাতার মেয়র। সঙ্গে চাঁচাঁছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন ডিএ-র দাবিতে সরব হওয়া সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলিকে। যা নিয়ে বিতর্কও শুরু হয় রাজ্য রাজনীতিতে।
তাঁর মন্তব্য নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সেই প্রসঙ্গে বাজেকদমতলা ঘাটে প্রশ্নের মুখে পড়েন পুরমন্ত্রী। জবাবে নিজের সোমবারের মন্তব্যেই অনড় থেকেছেন তিনি। ফিরহাদ বলেন, ‘‘আমি বাস্তব কথাই বলেছি। কারও পছন্দ হতে পারে, কারও পছন্দ নাও হতে পারে। হ্যাভ আর হ্যাভ নটস! আমার মতে হ্যাভ নটদের পাশে দাঁড়াও। পারলে হ্যাভস-দের পাশে দাঁড়াও। কিন্তু প্রায়োরিটি হ্যাভ নটসদের দিতে হবে।’’
সোমবার তিনি বলেছিলেন, ‘‘ডিএ নিয়ে এখন অনেক কথা হচ্ছে। মানুষের কাছে কোনটা প্রায়োরিটি (অগ্রাধিকার) হওয়া উচিত? যারা অবহেলিত এবং বঞ্চিত, তাদের মুখে ভাত তুলে দেওয়া? নাকি যারা অনেক পাচ্ছে তাদের আরও বেশি পাইয়ে দেওয়া?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যারা অনেক পায়, তাদের আরও পাইয়ে দেওয়া আমার কাছে পাপ বলে মনে হয়। আমি বলছি, না পোষায় ছেড়ে দিন না। সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট (কেন্দ্রীয় সরকার) যখন অনেক টাকা দিচ্ছে, সেখানে গিয়ে কাজে যোগ দিন। আমি কোনও মাল্টিন্যাশনাল (বহুজাতিক সংস্থা)-এর ক্লার্ক নই। মাল্টিন্যাশনালের কোনও বাবু নই, এগ্জিকিউটিভ নই। ট্যাক্সের টাকা দিয়ে আমার মাইনে হয়, আমি মানুষের সেবা করি। সেই ব্রতটা সবার আগে দরকার।’’
তাঁর এমন আক্রমণে বেজায় ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নগুলি। আগামী ১০ মার্চ ডিএ-র দাবিতে সরকারি কর্মচারীরা প্রশাসনিক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। ফিরহাদকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নগুলি তাদের ধর্মঘট সফল করতে বদ্ধ পরিকর। আর সরকারি কর্মচারীদের এই প্রশাসনিক ধর্মঘটকে সফল করতে বলে সমর্থন জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।