মারই ওদের পাওনা, নিদান দিলেন দিলীপ

জেএনইউতে রবিবারের হামলা সম্পর্কে বলতে গিয়ে সোমবার দিলীপবাবু এ রাজ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ‘হেনস্থা’র অভিযোগ-সহ নানা বিষয় উল্লেখ করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:২৬
Share:

জেএনইউ কাণ্ডে রাজভবনের সামনে কংগ্রেসের প্রতিবাদ।—নিজস্ব চিত্র।

জেএনইউতে ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীর তাণ্ডবকে কার্যত সমর্থন করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ঘটনার সরাসরি নিন্দা করা দূরস্থান, বিষয়টি তাঁর মতে ‘অস্বাভাবিক নয়’। এই সূত্রেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘সিপিএম, কমিউনিস্টদের মারা শুরু হয়েছে এ দেশে এবং তাদের বোধহয় এটা পাওনা আছে! কারণ, তারা যা ব্যবহার করেছে, এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, শিক্ষাঙ্গনে মারামারির রাজনীতি আমদানি করেছে কমিউনিস্টরা।

Advertisement

জেএনইউতে রবিবারের হামলা সম্পর্কে বলতে গিয়ে সোমবার দিলীপবাবু এ রাজ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ‘হেনস্থা’র অভিযোগ-সহ নানা বিষয় উল্লেখ করেন। এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে বলেন, ‘‘তাঁর মায়াকান্না, কুম্ভীরাশ্রু সন্দেহ জাগায়। উনি কার হয়ে দাঁড়াচ্ছেন? যারা দেশ-বিরোধী, যারা আমাদের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে, তাদের জন্য ওঁর হৃদয় কাঁপে।’’

প্রতিক্রিয়ায় রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘‘দিলীপবাবু হয় অতি নির্বোধ, অথবা ওঁর মাথার ঠিক নেই। চিকিৎসা করানো উচিত। ওঁকে সুস্থ মানুষ বলে মনেই করি না। আসলে পরিস্থিতি বোঝার ক্ষমতাটাই ওঁর নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে, কী এবং কেন— এ সব বুঝতে ওঁর অনেক যুগ লাগবে। তার চেয়ে বরং ওঁরা মুখ বন্ধ করে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করুন।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে দিলীপবাবুদের সম্পর্ক কতটুকু? শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মুক্ত চিন্তার জায়গা, সেখানে বামেদের আধিপত্য আমাদের গর্বের বিষয়। কথা বলার সময়ে দিলীপবাবু ভেবে রাখুন, মানুষ কিন্তু জবাব দিতে তৈরি হচ্ছেন!’’

Advertisement

তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল আবার দিলীপবাবুর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘‘ওরা দিল্লিতে এ সব করতে পেরেছে, কারণ ওখানে কোনও শাসন নেই। কিন্তু এ রাজ্যে এ সব করতে আসুক, দেখব কত হিম্মৎ!’’ এখানে এ সব করতে এলে হনুমান টুপি পরে লোকেরা ওদের ‘পাল্টা’ দাওয়াই দেবে বলেও জানিয়ে দেন অনুব্রত।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, ‘‘দিলীপবাবুর বক্তব্যে আমি অবাক হইনি। কারণ নাগপুরের (আরএসএসের সদর দফতর) রাজনীতির জিন থেকেই তাঁদের আমদানি।’’ জেএনইউ-কাণ্ডের প্রতিবাদে ছাত্র পরিষদ এ দিন কলেজ স্ট্রিটে ধর্না-অবস্থান করেছে। রাজভবনের সামনে মোমবাতি হাতে প্রতিবাদ করেছেন কংগ্রেস কর্মীরা। দলের যুব নেতা আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘জেএনইউ-এর মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রেরা পড়বে নাকি দুষ্কৃতীরা, জবাব দিতে হবে অমিত শাহকে!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement