জিতেন্দ্র তিওয়ারি। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা ভোটে পাণ্ডবেশ্বর কেন্দ্র থেকে বিজেপি-র টিকিটে লড়ে হেরেছেন তিনি। তার পর থেকেই মাঝে মাঝে কলকাতায় থাকছেন। ঘটনাচক্রে কলকাতায় এসে তিনি যেখানে থাকছেন, তার কিছু দূরেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি। এর পরেই জল্পনা শুরু হয়, পুর নির্বাচনকে মাথায় রেখে আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র তথা পাণ্ডবেশ্বরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি তাঁর পুরনো দলে ফিরতে পারেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সেই জল্পনায় জল ঢাললেন জিতেন নিজেই। জানিয়ে দিলেন, বিজেপি-তেই তিনি থাকছেন।
জিতেন আপাতত পালা করে আসানসোল এবং কলকাতা, দু’জায়গাতেই থাকছেন। ঘটনাচক্রে, তাঁর কলকাতার ফ্ল্যাট ভবানীপুর অঞ্চলে। অভিষেকের বাড়ি ‘শান্তিনিকেতন’-এর অদূরে। তাঁর মেয়ে পল্লবী কলকাতায় ডাক্তারির ছাত্রী। শহরে এসে মেয়ের ফ্ল্যাটেই ওঠেন জিতেন। এই দফায় গত ১৩ জুন থেকে অভিষেকের পাড়াতেই রয়েছেন জিতেন এবং তাঁর স্ত্রী চৈতালি। আগামী ২৩-২৪ তারিখ নাগাদ আসানসোলে ফিরবেন।
তবে কি এই দফাতেই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ব্যবস্থা পাকা করবেন? প্রশ্ন শুনে একটু বিরক্তই হলেন জিতেন। বললেন, ‘‘আমি অন্য কোনও দলে যোগ দিচ্ছি না। বিজেপি-তেই থাকব। সংগঠনকে মজবুত করার জন্য দল যা দায়িত্ব দেবে, তা পালন করব। সামনে পুরসভা ভোট। সেই ভোটে কী ভাবে ভাল ফল করা যায় সে দিকে নজর দেব। বিজেপি নেতৃত্ব যেমন বলবেন, সে ভাবেই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।’’
কলকাতায় তাঁর রুটিন কী? জিতেনের জবাব, ‘‘মেয়ে এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি। দলের কাজও করছি। দিন কয়েক আগে বিশ্ব রক্তদান দিবসে রক্তও দান করেছি।’’
গত ১৫ জুন জিতেনের ২২তম বিবাহবার্ষিকী ছিল। স্ত্রী-কন্যার সঙ্গে বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন তিনি। জিতেন জানালেন, ইতিমধ্যেই বিজেপি-র বেশ কয়েকটি বৈঠকেও অংশ নিয়েছেন। কয়েক দিন আগে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আসানসোল জেলা অফিসে পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের পরে দিলীপের সঙ্গে আলাদা ভাবে সাংগঠনিক বিষয়ে তিনি আলোচনা করেছিলেন বলেও জানান জিতেন। কলকাতায় থাকাকালীন মাঝে মধ্যেই হেস্টিংসে রাজ্য বিজেপি-র দফতরে যাচ্ছেন বলে দাবি তাঁর। সেখানে দলের কয়েকটি কর্মসূচিতেও যোগ দিয়েছেন তিনি।
মেয়াদ ফুরনো আসানসোল পুরনিগমে চলতি বছর ভোট হতে পারে। সে প্রসঙ্গে জিতেন বলেন, ‘‘আসানসোল শহরকে আরও উন্নত করতে গেলে পুরনিগমের পাশে দাঁড়াতে হবে রাজ্য সরকারকে। বিগত ৩ বছর তা হচ্ছিল না। এখন যাঁরা পুরনিগম চালাচ্ছেন তাঁরা উন্নয়ন করুন। শহরের বাসিন্দারা উপকৃত হোক। এটাই চাইব আমি।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘বিধানসভা ভোটে হারের পরেও আসানসোলের বিদায়ী বিজেপি কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করেছি।’’
বিধানসভা ভোটে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় বিজেপি ভাল ফল করতে পারেনি। জেলায় ৯টি আসনের মধ্যে মাত্র ৩টি দখল করতে পেরেছে তারা। আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র এলাকায় ৭টির মধ্যে মাত্র ২টি আসনে বিজেপি জিতেছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী পুরভোটে কঠিন লড়াই হতে পারে বলে মেনে নিয়েছেন জিতেন। তবে তিনি আশাবাদী, বিধানসভা ভোটের ব্যর্থতা ভুলে পুরভোটে তৃণমূলকে কড়া টক্কর দেবে বিজেপি।