শুভেন্দুদের পাশে নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি ধনখড়। —নিজস্ব চিত্র।
ভোট পরবর্তী হিংসার নিয়ে অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন বিজেপি নেতারা। তাঁদের সঙ্গে রাজভবনের খোলা বারান্দায় বৈঠক করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এ ভাবে রাজ্যের বিরোধী শিবিরের সঙ্গে খোলা বারান্দায় বৈঠকের ঘটনা বেনজির বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। যদিও অন্য একটি অংশ বলছে, এ নিয়ে তেমন বাঁধা ধরা কোনও নিয়ম নেই। রাজ্যপাল চাইলে খোলা বারান্দায় বৈঠক করতেই পারেন।
রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানাতে বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসছেন বলে সকালেই জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেই মতো বিকেল ৪টে নাগাদ বিধানসভা থেকে হেঁটে রাজভবনে এসে পৌঁছয় শুভেন্দু অধিকারী নেতৃত্বাধীন বিজেপি প্রতিনিধিদের একটি দল। রাজভবনের বারান্দায় রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক হয় তাঁদের। বৈঠক শেষে তাঁদের সঙ্গে নিয়েই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন ধনখড়। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করে বলেন, ‘‘বাংলায় গণতন্ত্র শ্বাস নিতে পারছে না। মানুষ রায় দিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসন তার কাজ করছে না। বরং প্রশাসনিক কর্তারা আগুন নিয়ে খেলছেন। লাগাতার ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটছে রাজ্যে। অথচ এক বারের জন্যও সেই জায়গাগুলিতে গেলেন না মুখ্যমন্ত্রী। লাগাতার হিংসা সত্ত্বেও নীরব রয়েছে প্রশাসন।’’
ভোট মেটার পর থেকেই রাজনৈতিক হিংসার অভিযোগ নিয়ে সরব রাজ্যপাল। তৃতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথবাক্য পাঠ করানোর পর সংবাদমাধ্যমের সামনেই মমতাকে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে পদক্ষেপ করতে বলেন। সোমবারও ফের সরাসরি মমতাকেই আক্রমণ করেন ধনখড়। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এ রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরেরও প্রধান। সংবিধানে হাত রেখে শপথ নিয়েছেন। সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে ওঁকে। আইন মেনে কাজ করতে হবে।’’
শুধু তাই নয়, নারদ-কাণ্ডে ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর মমতার আচরণেরও তীব্র সমালোচনা করেন ধনখড়। তাঁর মতে, সিবিআই-এর কাছে মমতা যে ভাবে ‘আমাকেও গ্রেফতার করুন’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, গণতান্ত্রিক দেশে এই ঘটনা নজিরবিহীন।
রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে মমতাকে তীব্র আক্রমণ করেন শুভেন্দুও। তিনি বলেন, ‘‘যদি কেউ ভেবে থাকেন ক্ষমতার দম্ভে বাংলায় বিরোধীদের খতম করবেন, তা হলে ভুল করবেন। ভোট মিটে যাওয়ার এক মাস ১২ দিন পরেও ১৭ হাজারেরও বিশে বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া। ব্যবস্থা নিতে হবে। ২ মে-র পর ৩ হাজারের বেশি ভুয়ো মামলা হয়েছে বিজেপি-র কর্মীদের বিরুদ্ধে। আমি এ নিয়ে আদালতে যাব। এ ভাবে ভয় দেখিয়ে রোখা যাবে না।’’