যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় নয়া মোড়। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে এখনও পর্যন্ত ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সকলেই রয়েছেন পুলিশি হেফাজতে। তবে পুলিশি তদন্তে আতশকাচের তলায় রয়েছেন আরও দু’জন। পুলিশ সূত্রে খবর, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার রাতে দশ জনের বেশি ওই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তবে তাঁদের পরিচয় নিয়ে এখনও কিছু খোলসা করেনি পুলিশ। ন’জনকে গ্রেফতার করা হলেও পড়ুয়ার মৃত্যুর সঙ্গে বাকিদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের এক নিরাপত্তারক্ষী বুধবার সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছিলেন, ওই ছাত্র তিন তলা থেকে পড়ে যাওয়ার পর একদল আবাসিক তাঁকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার পর ছাত্রদের পাশাপাশি হস্টেল সুপার দ্বৈপায়ন দত্ত তাঁকে হস্টেলের গেট বন্ধ রাখতে বলেছিলেন। তাঁকে বলা হয়েছিল, বাইরে থেকে কেউ যেন হস্টেলে ঢুকতে না পারে। তাঁর আরও দাবি, পড়ে যাওয়া ওই ছাত্রকে নিয়ে ট্যাক্সি বেরিয়ে যাওয়ার পর কলকাতা পুলিশের তরফে দু’জন এসেছিলেন। তাঁরা গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে কিছুটা এগোনোর পর দাঁড়িয়ে পড়েন। তার পর সেখান থেকে বেরিয়েও যান। পরে আরও কয়েক জন পুলিশ হস্টেলের সামনে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁরা ভিতরে ঢুকতে চাননি।
ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় বুধবার বিকেলে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে লালবাজারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়ই সে সব প্রশ্নের জবাব দিতে পারবেন বলে জানান স্নেহমঞ্জু। ডিন অফ স্টুডেন্টসকে ডেকে পাঠালে বুধবার লালবাজারে যাননি তিনি। ডিনের তরফে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের একাংশ তাঁকে ‘ঘেরাও’ করে রেখেছিলেন বলেই তিনি তলবে সাড়া দিতে পারেননি।
যাদবপুরকাণ্ডে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও দুই পড়ুয়া মনোতোষ ঘোষ এবং দীপশেখর দত্তকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের ২২ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার এই ঘটনায় আরও ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন সপ্তক কামিল্যা (বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী), মহম্মদ আরিফ (তৃতীয় বর্ষ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), আসিফ আফজল আনসারি (চতুর্থ বর্ষ, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), অঙ্কন সরকার (তৃতীয় বর্ষ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), অসিত সর্দার (বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী) এবং সুমন নস্কর (বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী)। এই ছ’জনকে আগামী ২৮ তারিখ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে থাকতে হবে।