West Bengal Panchayat Election 2023

‘ভোটের নামে প্রহসন হচ্ছে’, অশান্তি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ নওশাদ সিদ্দিকির

পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তি ও প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নওশাদ সিদ্দিকি। ভাঙড়-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় অশান্তি রুখতে ব্যর্থ কমিশন এমনই অভিযোগ তাঁর।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৩ ১৪:৫৭
Share:

ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) চেয়ারম্যান নওশাদ সিদ্দিকি। —নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটের দিন রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাসের ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনায় নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করলেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) চেয়ারম্যান নওশাদ সিদ্দিকি। শনিবার ভোটের দিন সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভাঙড়ের বিধায়কের দফতরে অভিযোগ আসতে শুরু করে। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ লিখিত ভাবে জানানো হয় নির্বাচন কমিশনে। কিন্তু আইএসএফের অভিযোগ কোনও অভিযোগের সুরাহা করেনি কমিশন।

Advertisement

এরপর ভোটের অশান্তি ও প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে কমিশনের ওপর ক্ষোভ উগরে দেন নওশাদ। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রথমেই বলেছি, নির্বাচন কমিশন চাইলে শান্তিপূর্ণ ভোট হবে। নয়তো যতই কেন্দ্রীয় বাহিনী আসুক না কেন, শান্তিপূর্ণ ভোট সম্ভব হবে না। মনোয়নপর্বেই যে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছিল তাতে সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কী ভাবে আমাদের প্রার্থীর বাড়িতে তালা মেরে দিয়েছে! গত রাত থেকে বোমাবাজি করা হচ্ছে। অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও পুলিশ যথাযথ ভূমিকা নেয়নি। সকাল থেকে বুথে বুথে রিগিং হচ্ছে। ঘেরাও করে মারধর করা হচ্ছে। বুথের দিকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা ভোটের নামে প্রহসন।’’

ভোটের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহার কম হওয়া নিয়েও কমিশনকেই দায়ী করেছেন ভঙড় বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী কী ভাবে মোতায়েন হবে, তার দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন তাঁরাই দায়িত্ব ভালভাবে পালন করেননি। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে তাঁদের বসিয়ে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি বলেই হয়তো এমন অবস্থা হয়েছে।’’ নওশাদ আরও বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়ে আগাগোড়াই কমিশনের গা-ছাড়া ভাব ছিল। তাই একের পর এক প্রাণহানি ঘটল। মায়ের কোল খালি হল, এর দায় নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে।’’

Advertisement

আইএসএফ কর্মী ও বিরোধীদের উপরে শাসক দলের সন্ত্রাস হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন নওশাদ। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের পোলিং এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। কোথাও কোথাও তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাঙড়-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই ঘটনা ঘটেছে। শুধু আইএসএফ নয়, সামগ্রিক ভাবে বিরোধী দলগুলিকে আক্রমণ করা হয়েছে। কোথাও দেখলাম ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।’’ নওশাদের আরও অভিযোগ, ‘‘সবকিছুর পর শাসকদল তৃণমূল বলছে সবই বিরোধীদের চক্রান্ত। আসলে এদের পায়ের নিচে মাটি নেই। এরা যে আচারণ করেছে, তাতে মানুষ এদের পাশে নেই। তাই সুকৌশলে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে ভয় দেখিয়ে মানুষকে ভোট দিতে না দিয়ে, নিজেদের পক্ষে ভোট ছিনিয়ে নিতে চাইছে।’’

মঙ্গলবার পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলার শুনানি রয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাস ও মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে নওশাদের বক্তব্য, ‘‘নিশ্চিত ভাবে বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে আছে। মঙ্গলবার এই বিষয়ে একটি শুনানি রয়েছে। আদালত দেখুক ভোটের নামে কী প্রহসন চলছে। মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। আমরা আশা করছি আগামী মঙ্গলবার এ বিষয়ে আমরা আদালত থেকে কোনও রায় পাব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিরোধীদের উপর সারা রাজ্যে যে ভাবে আক্রমণ নেমে এসেছে, সাধারণ মানুষকে যে ভাবে ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছে না, এটা গণতন্ত্রের পরিপন্থী। যা অভিযোগ আসছে তা লিখিত আকারে জমা দেওয়া হচ্ছে। সেই সব নথি একত্র করে আগামী দিনে কী করা যায় পরে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement