কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। ফাইল চিত্র।
শুধু নিয়োগ নয়, শিক্ষক বদলিতেও ‘দুর্নীতি’ হচ্ছে বলে মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর মন্তব্য, “ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে হবে। এখন দেখছি বদলিতেও দুর্নীতি! এটা খুবই খারাপ ইঙ্গিত দিচ্ছে।” বিচারপতির নির্দেশ, ২ সপ্তাহের মধ্যে পুরুলিয়া জেলার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে শিক্ষক বদলি নিয়ে রিপোর্ট দিতে হবে। আগামী ২০ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
কিছু দিন আগেই পুরুলিয়ার ঝালদা হাই স্কুলের এক শিক্ষক বদলির মামলায় জেলা স্কুল পরিদর্শককে ডেকে পাঠান বিচারপতি বসু। সোমবার তিনি হাই কোর্টে হাজিরা দেন। আদালতকে জেলা স্কুল পরিদর্শক জানান, আকছার শিক্ষক বদলির ঘটনা ঘটছে। বদলির কারণে গোটা জেলার সব স্কুলের অবস্থাই খুব খারাপ। ষাট শতাংশ শিক্ষকই বদলি নিয়ে অন্য জেলায় চলে গেছেন। জেলার বহু স্কুল উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। তাঁর মতে, স্কুলগুলিতে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত রক্ষা করা যাচ্ছে না। ঝালদার ওই স্কুলে আগে ২১ জন শিক্ষক ছিলেন। সম্প্রতি ৮ জন বদলি নিয়ে চলে গিয়েছেন।
স্কুল পরিদর্শকের বক্তব্য শুনে আদালতের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়, পড়ুয়াদের কথা না ভেবে কী ভাবে শিক্ষকদের বদলি করা হচ্ছে? এর পিছনেও কি দুর্নীতি কাজ করছে? আদালতের পর্যবেক্ষণ, এমন বদলির কারণে শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে অনেক স্কুল। বিশেষ করে গ্রাম্য এলাকায় যেখানে সরকারি স্কুলই ভরসা। সেখানে এমন চললে শিশুরা সঠিক পদ্ধতিতে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবেন।
প্রসঙ্গত, শিক্ষক বদলিতে দুর্নীতির অভিযোগে আগেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যদিও ডিভিশন বেঞ্চ অন্য একটি মামলার রায়ে এই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থাও শিক্ষক বদলির মামলায় পড়ুয়াদের সংখ্যার উপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এ বার শিক্ষক বদলি নিয়ে অসন্তোষ শোনা গেল বিচারপতি বসুর গলাতেও।