প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়তে চাইছে না স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র। শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে আগেই তারা বিদ্ধ। দাঁড়াতে হয়েছে কাঠগড়ায়। এ বার উচ্চ প্রাথমিকের কাউন্সেলিং শেষে স্কুল নির্বাচনের ক্ষেত্রেও ভয়ঙ্কর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি শেষ হওয়া এই কাউন্সেলিংয়ে চাকরিপ্রার্থীরা সুপারিশপত্র না পেলেও স্কুল নির্বাচন করতে পেরেছেন। সেখানেও দেখা দিয়েছে বড়সড় গলদ। বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থীর অভিযোগ, তাঁরা যে বিষয়ে এবং যে পদের জন্য স্কুল নির্বাচন করেছিলেন, সংশ্লিষ্ট সেই স্কুলে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন সেখানে সেই বিষয়ে শূন্যপদই নেই।
প্রশ্ন উঠেছে, প্রায় দশ বছর ধরে চলা উচ্চ প্রাথমিকের এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এত দিন পরে আদালতের নির্দেশে কাউন্সেলিং শুরু হলেও সেখানে এই রকমের গলদ কেন থাকছে? ক্ষুব্ধ চাকরিপ্রার্থীরা বিষয়টি শুধরে নেওয়ার জন্য এসএসসি-কে চিঠিও লিখেছেন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের বাসিন্দা আনারুল মোল্লা জানিয়েছেন, বাংলার শিক্ষক হিসেবে জেনারেল এবং ওবিসি, দু’টি ক্ষেত্রেই তিনি যে কোনও স্কুল নির্বাচন করতে পারতেন। তিনি বাড়ির কাছের স্কুল নির্বাচন করেছিলেন। পরে সেই স্কুলে গিয়ে জেনেছেন, সেই স্কুলে বাংলার কোনও শিক্ষকপদ ফাঁকা নেই।
একই ভাবে উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙ্গার বাসিন্দা পার্থ তেওয়ারি জানিয়েছেন, ‘শারীরিক প্রতিবন্ধী’ সংরক্ষিত আসনে বাড়ির কাছাকাছি একটি স্কুলকে নির্বাচন করেছিলেন। এখন খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, ওই স্কুলে তাঁর বিষয়ের কোনও শিক্ষকের পদই ফাঁকা নেই। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, তাঁদের অনেকেই এই সমস্যায় পড়েছেন।
প্রশ্ন উঠেছে, কোন স্কুলে কত শূন্যপদ আছে, তার মধ্যে কোনটা সংরক্ষিত, তার তালিকা সঠিক ভাবে তৈরি না-করে কেন চাকরিপ্রার্থীদের স্কুল নির্বাচন করতে দিল এসএসসি? কমিশনের এক কর্তার ব্যাখ্যা, ‘‘শূন্যপদের তালিকা আমরা তৈরি করি না। এই তালিকা শিক্ষা দফতর তৈরি করে পাঠায়। সেই তালিকা দেখেই চাকরিপ্রার্থীদের স্কুল নির্বাচন করতে দেওয়া হয়েছে।’’ তবে কমিশন ও শিক্ষা দফতরের কর্তাদের আশ্বাস, এই নিয়ে যে অভিযোগ জমা পড়ছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হবে।
উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থী সুশান্ত ঘোষের কথায়, ‘‘এত বছর ধরে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছ। এর পরে এই ধরনের ভুল হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। উৎসশ্রী পোর্টালের সময়ে প্রচুর শিক্ষকের বদলি হয়েছে। সেই বদলির পুরো আপডেট হয়তো শিক্ষা দফতরের কাছে নেই। তাই এই সমস্যা তৈরি হতে পারে।’’ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘সমস্যায় পড়া চাকরিপ্রার্থীদের বাড়ির কাছের স্কুলেই চাকরি দিতে হবে।’’