WBSSC

WBSSC: সঙ্গী নতুন জট, উচ্চ প্রাথমিকে শুরু ইন্টারভিউ

পারস্পরিক দূরত্ব-সহ করোনা বিধি মেনে ওই স্কুলে সকাল সাড়ে ৯টা এবং বেলা দেড়টায় দু’টি শিফটে ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২১ ০৫:৫২
Share:

ফাইল চিত্র।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শেষ বেলায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিয়ে শনিবার অতিমারি পর্বে প্রথম অফলাইন পরীক্ষা শুরু হয়েছে। উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য সোমবার শুরু হল অফলাইন ইন্টারভিউও। কিন্তু নতুন জটিলতার সৃষ্টি হওয়ায় সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া কবে এবং কতটা মসৃণ ভাবে সম্পন্ন হবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

Advertisement

নতুন জটিলতার মূলে আছে কলকাতা হাই কোর্টে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র একটি আবেদন। নিয়োগে অস্বচ্ছতা নিয়ে অভিযোগ যে নিতান্ত কম নয়, তা কার্যত মেনে নিয়ে এসএসসি এ দিন হাই কোর্টে জানিয়েছে, এই অভিযোগের পাহাড় সামলানোর মতো লোকবল তাদের নেই। তাই আদালত অভিযোগের নিষ্পত্তির জন্য যে-সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে, তা বদলানো হোক। বহু কর্মপ্রার্থীর অভিযোগ, নিজেদের গাফিলতি ঢাকার জন্য কর্মী-সংখ্যার স্বল্পতার দোহাই নিয়ে সময় বাড়াতে চাইছে কমিশন। তাদের এই আর্জির বিরুদ্ধে অনেক প্রার্থী পাল্টা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন বলে শিক্ষা সূত্রের খবর।

কমিশনের আর্জিতে বলা হয়েছে, তাদের সচিব পদে অফিসার কম। ডেপুটি সেক্রেটারি আছেন তিন জন। কিন্তু যে-পরিমাণে অভিযোগ জমা পড়েছে, নির্ধারিত সময়ে তার নিষ্পত্তি করতে ন্যূনতম ১০ জন অফিসার প্রয়োজন। ৯ জুলাই উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, যাঁরা ইন্টারভিউয়ের তালিকায় ঠাঁই পাননি, তাঁরা কমিশনে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন এবং কমিশনকে তিন মাসের মধ্যে সেই সব অভিযোগের যথাযথ নিষ্পত্তি করতে হবে। কমিশনের বক্তব্য, তারা কম লোকবল নিয়ে ওই সময়ের মধ্যে সব অভিযোগের সুরাহা করতে পারবে না।

Advertisement

শিক্ষা সংক্রান্ত মামলার অনেক কৌঁসুলির মতে, যথাসময়ে সব অভিযোগের নিষ্পত্তি না-হলে অনেক যোগ্য প্রার্থী বাদ পড়তে পারেন এবং তাঁরা ন্যায্য বিচার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। কমিশন লোকবলের কারণ দেখিয়ে ওই সব অভিযোগ অনির্দিষ্ট কাল ফেলে রাখতে চাইছে কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, নিষ্পত্তি করতে গিয়ে যদি অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হয়, তা হলে কমিশনের কর্তাদের গায়ে কালির ছিটে লাগতে পারে। শাস্তির মুখে পড়াও অস্বাভাবিক নয়।

এই নতুন জটের মধ্যেই এ দিন বিধাননগর মিউনিসিপাল স্কুলে শুরু হয় নিয়োগের ইন্টারভিউ। এসএসসি-র খবর, পারস্পরিক দূরত্ব-সহ করোনা বিধি মেনে ওই স্কুলে সকাল সাড়ে ৯টা এবং বেলা দেড়টায় দু’টি শিফটে ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। তবে এ দিন শুধু এক শিফটে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় উর্দু, নেপালি ও সাঁওতালি ভাষার প্রার্থীদের। ৪ অগস্ট পর্যন্ত ১৫,৪০৬ জন ইন্টারভিউ দেবেন। এসএসসি-র আধিকারিক পার্থ কর্মকার জানান, আগামী দিনে রোজ ২৪টি টেবিলে ইন্টারভিউ বোর্ড বসবে। রোজ ১২০০ থেকে ১৫০০ জন প্রার্থী ইন্টারভিউ দেবেন। প্রথম দিন কোভিড বিধি মেনে ইন্টারভিউয়ে প্রার্থীরা খুশি। ফের ইন্টারভিউ হবে ২৩ জুলাই।

ইন্টারভিউয়ের তালিকায় যাঁদের নাম ওঠেনি, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এ দিনেও তাঁদের অনেকে আবেদনপত্র জমা দিতে এসেছিলেন সল্টলেকে এসএসসি-র কার্যালয়ে। তাঁদের কয়েক জন জানান, ই-মেলেও অভিযোগপত্র পাঠানো যেত। কিন্তু এর আগে ই-মেলের সঙ্গে দেওয়া নথি আপলোডে সমস্যা হয়েছিল। তাই তাঁরা আর ঝুঁকি নিতে চাইছেন না।

অন্য দিকে, এ দিনই সল্টলেকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সামনে গিয়ে টেট-উত্তীর্ণ ডিএলএড (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন) প্রশিক্ষিত কিছু প্রার্থী প্রাথমিকে নিয়োগে তাঁদের প্রতি বঞ্চনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানান। তাঁদের বক্তব্য, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই) ২০১৮ সালে নতুন নিয়ম চালু করে, শুধু ডিএলএড নয়, টেট-উত্তীর্ণ বিএড প্রশিক্ষিত প্রার্থীরাও প্রাথমিকে বসতে পারবেন। প্রাথমিক টেট-উত্তীর্ণ বঞ্চিত ডিএলএড ঐক্য মঞ্চের প্রার্থী প্রিয়ব্রত দাস বলেন, “এই নিয়মের ফলে শুধু প্রাথমিকের জন্য ডিএলএড প্রশিক্ষণ নেওয়া টেট-উত্তীর্ণ প্রার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, টেট পাশ করলেই নিয়োগ হবে। আমরাও টেট পাশ এবং ডিএলএড প্রশিক্ষিত।”

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য বলেন, “সম্প্রতি প্রাথমিকে যে-নিয়োগ হল, সেখানে স্বচ্ছ ভাবেই নিয়োগ হয়েছে। টেট পাশ যোগ্য ডিএলএড প্রশিক্ষিত প্রার্থীরও নিয়োগ হয়েছে। কেউ বঞ্চিত হননি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement