ছবি: পিটিআই।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতার নামে রাজ্য জুড়ে অশান্তি ছড়ানোর টাকা, রসদ কারা জুগিয়েছে, তা নিয়ে যৌথ ভাবে খোঁজখবর শুরু করেছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। নবান্ন সূত্রের দাবি, যদি গোলমালের পিছনে দুষ্টচক্রের হদিশ মেলে, কড়া ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না রাজ্য।
নবান্নের কর্তাদের একাংশের দাবি, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া গ্রামীণ, দুই ২৪ পরগনার যে সব এলাকায় গোলমাল চরম আকার নিয়েছিল, সেখানে উগ্রবাদী কয়েকটি সংস্থার উপস্থিতি গত কয়েক মাস ধরেই দেখা যাচ্ছিল। অযোধ্যা মামলার রায়ের সময়েও এই সব এলাকায় অতিসতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ যে ভাবে হিংস্র হয়েছে, তা রাজ্য গোয়েন্দারা আগাম আঁচ করতে পারেননি বলে কার্যত মেনে নিয়েছেন নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা। এক গোয়েন্দা কর্তার কথায়, ‘‘জমায়েত হবে খবর ছিল। কিন্তু তা যে এমন চেহারা নেবে সেটা ভাবা যায়নি। এখন কেন্দ্র-রাজ্য এক হয়ে বিক্ষোভকারীদের আসল উদ্দেশ্য খোঁজার চেষ্টা হচ্ছে।’’
গত কয়েক দিন ধরে এই অশান্তির নেপথ্যে কারা, এ রাজ্যে সক্রিয় সব ক’টি কেন্দ্রীয় সংস্থাকেই তার তথ্য জোগাড় করতে বলা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর। তিনটি ছাত্র সংগঠন, কেরল ও হায়দরাবাদের দু’টি রাজনৈতিক দল, একটি যুব সংগঠন এবং আরও দু’টি সংস্থার ভূমিকা খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। দেখা হচ্ছে কয়েক জন রাজনৈতিক নেতার ভূমিকাও। রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থার যোগাযোগও হয়েছে।
আরও পড়ুন: আন্দোলন থামাতে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে শিক্ষাঙ্গনে ঢুকতে নিষেধ পুলিশকে
স্টেশন জ্বালিয়ে দেওয়া বা জাতীয় সড়কে অশান্তি ছড়ানোর মতো ঘটনার তদন্ত প্রয়োজনে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)কে দিয়ে করানোর কথাও ভাবছে কেন্দ্র। এনআইএ-এর গোয়েন্দারা প্রাথমিক রিপোর্ট সংগ্রহ শুরু করেছেন এবং নবান্নের থেকেও ঘটনার রিপোর্ট নেওয়া হবে বলে মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে। নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতার নামে রোষ দেখানোর নিশানায় মূলত ছিল রেল লাইন, রেল স্টেশন, জাতীয় সড়ক। কয়েকটি জায়গায় মোদী সরকারের পাশাপাশি তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেওয়া হয়েছে। এ সবের পিছনে বড় মাথা কাজ করছে বলে মনে করছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশ। নজর রাখা হচ্ছে বাছাই করা কয়েক জনের সামাজিক মাধ্যমে করা পোস্টেও।