নিজস্ব চিত্র।
প্রেমিকের সঙ্গে ছক কষে স্বামীকে মদ খাইয়ে বেসামাল করে মাথায় পর পর হাতুড়ির ঘা। মৃত্যু নিশ্চিত করতে দেহ বস্তায় ভরে কুয়োয়। পুলিশি তদন্তে ফাঁস হল প্রেমিক-প্রেমিকার অপকীর্তি। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য হুগলির ধনিয়াখালিতে। মৃতের স্ত্রী তথা অভিযুক্তের প্রেমিকা চাঁপাকে আটক এবং প্রেমিক বেচারামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ২৯ এপ্রিল হুগলির ধনিয়াখালির ভান্ডারহাটি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দেউলপাড়া এলাকার একটি কুয়ো থেকে একটি বস্তাবন্দি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানতে পারে, মৃত ব্যক্তির নাম সনাতন মাল। তিনি জাঙ্গিপাড়া থানার মহেশপুর গ্রামের বাসিন্দা। কিন্তু কেন খুন হলেন সনাতন?
পুলিশ সূত্রে খবর, চাঁপার সঙ্গে বছর সতেক আগে বিয়ে হয় জাঙ্গিপাড়ার মহেশপুরের সনাতনের। তাঁদের একটি বছর পনেরোর ছেলে রয়েছে। চাঁপার দিদি দোলন ধাড়া ভান্ডারহাটি দেউলপাড়ার বাসিন্দা। পুলিশ জানতে পেরেছে, সেখানে যাতায়াতের সুবাদে ৩৭ বছর বয়সি বেচারাম মালিকের সঙ্গে প্রায় সাত বছর ধরে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন চাঁপা।
গত ২৮ এপ্রিল সনাতনকে নিয়ে চাঁপা ধনিয়াখালিতে ডাক্তার দেখাতে আসেন। ডাক্তারখানা থেকে ফেরার পথে তাঁদের দেখা হয় বেচারামের সঙ্গে। পূর্বপরিচিত হওয়ায় বেচারাম সস্ত্রীক সনাতনকে নিমন্ত্রণ করে বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতে বসেই দু’জনে মদ্যপান করেন। এর পর সনাতন বেসামাল হয়ে পড়লে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে, গলায় তার পেঁচিয়ে সনাতনকে খুন করেন বেচারাম। রাত বাড়তে বাড়ি থেকে প্রায় তিনশো মিটার দূরে একটি কুয়োয় দেহ ফেলা হয়।
সকালে কুয়ো ব্যবহার করতে গিয়ে দেখা যায়, বস্তা ভাসছে। ধনিয়াখালি থানার পুলিশ এসে বস্তা তুলে তা থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতের মাথায় আঘাত, গলায় ধারাল অস্ত্রের গভীর দাগ ছিল। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ সনাতনের স্ত্রী চাঁপাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই ভেঙে পড়েন তিনি। গ্রেফতার হন বেচারামও। যদিও বেচারাম প্রণয়ের সম্পর্কের কথা স্বীকার করতে চাননি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। বেচারামের দাবি, টাকা পয়সা সংক্রান্ত বিবাদের জেরে রেগে গিয়ে তিনি এই কাণ্ড ঘটান। পুলিশ দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করছে।