—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কেন্দ্রীয় পরিবহণ নীতির বিরোধিতায় ট্রাক এবং লরিচালকদের পাশাপাশি তেলের ট্যাঙ্কার চালকদের একাংশও বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন। তাঁরাও শুরু করেছেন কর্মবিরতি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রায় ২৫০০ পেট্রল পাম্পের মধ্যে অনেকগুলি ইতিমধ্যেই ‘ড্রাই’ (তেল ফুরিয়ে যাওয়া) হয়ে গিয়েছে। চালকেরা ট্যাঙ্কারে তেল তুলতে বাধা দেওয়ায় পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর, আসানসোল থেকে মালদহ, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের এইচপিসিএল, বিপিসিএল এবং ইন্ডিয়ান অয়েলের মতো কোম্পানির পেট্রল পাম্পে তেলের সমস্যা শুরু হয়েছে।
‘হিট অ্যান্ড রান’-এর ঘটনায় নতুন আইনের বিরুদ্ধে ভারত জুড়ে বেশ কয়েকটি পরিবহণ সমিতি প্রতিবাদ করছে। ভারতীয় দণ্ডবিধিকে সরিয়ে আনা ভারতীয় আইন সংহিতা (বিএনএস)-য় বলা হয়েছে চালকের ভুলে গাড়ি দুর্ঘটনা হলে এবং সেটা পুলিশ বা প্রশাসনের কোনও আধিকারিককে না জানিয়ে যদি তিনি পালিয়ে যান, সে ক্ষেত্রে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড কিংবা ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। আগে আইপিসি বা ভারতীয় দণ্ডবিধিতে এই ধরনের মামলায় শাস্তির মেয়াদ ছিল দু’বছর। বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলির দাবি, এই আইনের ফলে চালকেরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন এবং তাঁদের উপর অন্যায় ভাবে শাস্তির কোপ পড়তে পারে। তাদের আরও যুক্তি, দুর্ঘটনার পর কোনও গাড়িচালক আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে তাঁরা গণপিটুনির শিকার হতে পারেন। বস্তুত, কেন্দ্রীয় পরিবহণ নীতির বিরোধিতায় দেশের যত্রতত্র ট্রাক এবং লরিচালকদের বিক্ষোভ-আন্দোলন চলছে। তাতে বাদ নেই বাংলাও। প্রত্যেক দিনই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাক চালকদের বিক্ষোভের খবর মিলছে।
মঙ্গলবার কলকাতার খিদিরপুর এবং বন্দর এলাকার একাধিক রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ট্রাকচালকদের এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভে। তাঁদের দাবি, নতুন আইন সংশোধন করা না-করা পর্যন্ত ট্রাক বা লরি চালানো বন্ধ রেখে বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ চলবে। চালক এবং খালাসীরা বিক্ষোভ করেছেন হলদিয়া , দুর্গাপুর এবং আসানসোলেও। এর মধ্যে রাজ্যের জাতীয় সড়কের দুই পাশে একের পর এক পেট্রল পাম্প ‘ড্রাই’ হয়ে গিয়েছে। যেমন, হাওড়ার মৌরিগ্রাম ইন্ডিয়ান অয়েল ডিপোয় বেশ কিছু ট্যাঙ্কারে তেল তোলা হলেও বুধবার থেকে সেখানে প্রভাব পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোল পাম্প ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি প্রসেনজিৎ সেন। তিনি বলেন, ‘‘যে হেতু কেন্দ্রীয় নীতি অত্যন্ত কড়া করা হয়েছে, তাই চালকরা ট্যাঙ্কার চালাতে অস্বীকার করছেন। তাতেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।’’ এ ব্যাপারে তিনি রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন প্রসেনজিৎ।
কিন্তু পরিস্থিতি যা তাতে বুধবারও ট্রাক, লরি এবং ট্যাঙ্কার চালকদের আন্দোলন চলবে। এবং এর ফলে সকাল থেকেই প্রভাব পড়তে পারে পেট্রল পাম্পগুলোয়।