আব্বাস সিদ্দিকি। —ফাইল চিত্র
নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর জোট নিয়েও। কিন্তু ভোটে হারলেও এক বিধায়ক নিয়েই যে তিনি জোটের সঙ্গেই থাকছেন তা স্পষ্ট করে দিলেন আইএসএফ নেতা আব্বাস সিদ্দিকী।
হতাশাজনক ফলাফলের পর বামফ্রন্ট, কংগ্রেস ও আইএসএফের কি একসঙ্গে রাজনীতির পথ চলা সম্ভব? প্রশ্নের জবাবে আনন্দবাজার ডিজিটালকে আব্বাস বলেন, “হার-জিত হতেই পারে। তা বলে জোট এগিয়ে যাবে না এটা হতে পারে না। বাকি যাঁরা রয়েছেন তাঁরা কী ভাবছেন না ভাবছেন তা আলোচনার মধ্যে দিয়ে উঠে আসবে।” তিনি আরও বলেন, “ভোটদান দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। আমার বিজেপি-কে পছন্দ নাও হতে পারে। আমার তৃণমূলকেও পছন্দ না হতে পারে। কারও আবার আইএসএফ-কে পছন্দ না হতে পারে। সবারই পছন্দ অপছন্দ রয়েছে। তবে মানুষের রায়কে আমরা সম্মান জানাই।”
ভোটের ব্যর্থতার পর্যালোচনা প্রসঙ্গে আব্বাসের বক্তব্য, “যাঁরা ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের নেতৃত্বে আছেন বা যাঁরা সংযুক্ত মোর্চার দায়িত্বে আছেন তাঁরা নিশ্চয়ই আলোচনা করছেন। আমি আইএসএফ প্রতিষ্ঠা করেছি ঠিকই কিন্তু নেতৃত্বের কোনও দায়িত্ব আমার কাঁধে রাখিনি। যাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেগুলো তাঁরাই আলোচনা করবেন, তাঁরাই বলতে পারবেন। সংযুক্ত মোর্চার ক্ষেত্রেও ফলাফল নিয়ে যাঁরা নেতৃত্ব আছেন তাঁরাই আলোচনা করছেন। তাঁরাই যা বলার বলবেন।” এ বারের ভোটে আব্বাসের ভাই নওশাদ সিদ্দিকী ভাঙড় থেকে সংযুক্ত মোর্চার একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে জয় পেয়েছেন। সেই একমাত্র বিধায়ককে সামনে রেখেই তাদের লড়াই চলবে বলে জানিয়েছেন আব্বাস।
সূত্রের খবর, তৃণমূলে যোগদানের জন্য আইএসএফ বিধায়কের ওপর চাপ তৈরি করা হচ্ছে। আব্বাস বলেন, “প্রথমত আমার কাছে তেমন কোনও খবর নেই। দ্বিতীয়ত আমরা একটা নীতি নিয়ে চলি। রাজনীতি আমাদের কাছে মানবসেবা, সমাজসেবা ও দেশসেবা। আমরা দেশবাসীর সেবার জন্য রাজনীতিতে নেমেছি। তাতে একটা, দুটো, তিনটে... ক’টি আসন পেলাম সেটা কোনও বিষয় নয়। যত জন দেশবাসী আমাদের ভোট দিয়েছেন তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ। আমরা আমাদের মতো করে মানুষের জন্য কাজ করে যাব।” তিনি আরও বলেন, “ভাঙড়ের মানুষ তৃণমূলকে চায় না বলেই আইএসএফের প্রার্থীকে জয়ী করেছেন। তাই সেই সব মানুষের বিশ্বাস যাতে কোনওভাবেই না ভাঙে সেটা দেখাও আমাদের দায়িত্ব। আমরা সেই দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব।”
মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের রমজান মাস চলছে। ফুরফুরা শরিফেও এই মাসটি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা হয়। তাই সংযুক্ত মোর্চার আগামী দিনের পথ চলার আলোচনা যে খানিকটা স্থিমিত রয়েছে তা মেনে নিয়েছেন পীরজাদা। তাঁর কথায়, “এখন রমজান মাস চলছে বলে আমাদের আলোচনা একটু পিছিয়ে আছে। এই সময় ঈশ্বরের উপাসনার পাশাপাশি গরিবদের পাশে থাকার জন্য অনেক কাজ আমরা করে থাকি।” এই পর্ব মিটে গেলেই তিনি ফের রাজনীতির ময়দানে নেমে পড়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন।