রাজনীতি-নয়: করোনা মোকাবিলায় এই বার্তাই দিলেন সাংসদ দেব। মেদিনীপুরে শনিবার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
কোনও একক দল নয়, সব দলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সকলে মিলে মানুষের পাশে থাকতে হবে। করোনা পরিস্থিতিতে এমনটাই চান তৃণমূলের তারকা সাংসদ দেব। তাঁর কথায়, ‘‘যেটা ভুল হয়েছে ভুলে যান। নতুন করে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। আমি একা নই (একা তৃণমূল নয়), আমাদের সব দলকে, সেটা বিজেপি হতে পারে, সিপিএম, কংগ্রেসও হতে পারে, সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এই সময়টা রাজনীতি করার নয়। এটা ভোটের সময় নয়, এটা মানুষের পাশে থাকার সময়।’’
করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শনিবার জেলা পরিষদের সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতিগুলির ভিডিয়ো বৈঠকে যোগ দিতে মেদিনীপুরে আসেন দেব। ছিলেন সাংসদ মানস ভুঁইয়া, মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, জেলা সহ- সভাধিপতি অজিত মাইতি, বিধায়ক দীনেন রায় প্রমুখ। বৈঠক শেষে দেব বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়াটা এখন একটা বড় বিষয়। এর জন্য সরকার যত রকমভাবে সম্ভব চেষ্টা করে যাচ্ছে। খুঁত বার করার সময় আমরা প্রচুর পাব। এই সময়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তবেই সংক্রমণ এড়ানো যেতে পারে।’’ তাঁর মতে, ‘‘ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের থাকার জন্যও কোয়রান্টিন সেন্টার তৈরি করতে হবে। অনেকের একটাই বাড়ি। ফিরে তাঁরা বাড়িতে থাকবেন না বাড়ির বাইরে কোয়রান্টিন সেন্টারে থাকবেন, সে সব দেখতে হবে। কেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরতে চাইছেন? কাজ নেই বলে। কাজ তো এখানেও নেই। এখানেও তো গৃহবন্দি থাকতে হবে। আমাদের উপায় খুঁজতে হবে। আমার সরকার যথেষ্টভাবে চেষ্টা করছে।’’
স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর দিকে আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করেন দেব। তাঁর কথায়, ‘‘একজন সাংসদ হিসেবে আমার ইচ্ছে, এখন সাংসদ তহবিলের সব টাকা স্বাস্থ্য খাতে খরচ করা উচিত। আমরা সবাই জানি, এই করোনা এখন থাকবে। তাই স্বাস্থ্যের পরিকাঠামো আরও ঠিক করতে হবে। হাসপাতালে যেন আইসিইউ শয্যা থাকে, কিট থাকে। এখন মে মাস। জুলাই, অগস্টেও এই কথাটাই বলব।’’
এই সময় আপনার ঘাটালে না আসা নিয়ে তো বিভিন্ন শিবির কটাক্ষ করছে? দেবের জবাব, ‘‘আমি ছবি তুলে পোস্ট করার লোক নই। আমি জেলাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। দলের জেলা সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। আমি দিদির (মুখ্যমন্ত্রী) সঙ্গেও কথা বলেছি। যতটা সম্ভব ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছি। মাঝে আসার চেষ্টাও করেছিলাম। তখন জেলাশাসক বলেছিলেন, আপনি এলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যাবে না। প্রচুর ভিড় হবে।’’ সঙ্গে জুড়ছেন, ‘‘আজ ভিডিয়ো কনফারেন্স ছিল বলেই এলাম। আমি অজিতদাকে বলে রেখেছিলাম, আমি আসব।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিরও দাবি, ‘‘দেব বহুবার আসতে চেয়েছে। আমি এবং জেলাশাসক ওকে বহুবার মানা করেছি। ও কোথাও গেলেই পাঁচ হাজার লোক জুটে যাবে। তখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যাবে না।’’
সুকৌশলে রাজনীতির কথাও বলেছেন দেব। বলেছেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের হাঁটা দেখে আমারও কষ্ট হয়। যাঁরা আমাদের ভোটার নন, বিদেশে থাকেন, তাঁদের জন্য বিমান পাঠাতে পারি, যাঁরা আমাদের ভোটার, এ দেশেই থাকেন, দেশের উন্নয়নে সাহায্য করেন, তাঁদেরকে আমরা আনতে পারছি না, এ সব দেখে আমারও কষ্ট হয়। আমার সরকার যথেষ্ট চেষ্টা করছে। অন্য কোনও সরকারের যদি মনে হয়, আরও কিছু করা যেত, তাহলে তারা ট্যুইট ইত্যাদি না করে সাহায্যের হাতটা বাড়াক।’’