ফাইল চিত্র।
কোনও ভিআইপি সভা বা অন্য যেখানেই যান, সেখানে কোনও রকম হামলার আশঙ্কা দেখা দিলে ভিআইপি-কে ঘিরে মানব-প্রাচীর গড়তে হবে বা বর্ম হয়ে দাঁড়াতে হবে নিরাপত্তারক্ষীদেরই। প্রকাশ্য জনসভায় নিরাপত্তা বেষ্টনী টপকে জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে-কে গুলি করে হত্যার সাম্প্রতিক ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভিআইপি-দের নিরাপত্তার ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশের কাছে এই মর্মে নির্দেশ পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ভিআইপি নিরাপত্তা শাখা। কেন্দ্রের সেই গুচ্ছ নির্দেশিকা মেনে চলার জন্য রাজ্যের সব জেলার পুলিশ সুপার ও পুলিশ কমিশনারদের বার্তা দিয়েছে আইবি বা রাজ্য গোয়েন্দা দফতর।
পুলিশি সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ভিআইপি যেখানে থাকবেন, তার কাছাকাছি এলাকায় প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে কঠোর হতে হবে। আগে থেকেই ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে ভিআইপি-র কাছে কেউ পৌঁছতে না-পারে। ভিআইপি-র কাছাকাছি এলাকায় মানব-প্রাচীর হয়ে দাঁড়াতে হবে নিরাপত্তারক্ষীদের। গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্তা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ডিরেক্টর অব সিকিয়োরিটির কাছেও ওই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।
ভিআইপিদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে সাধারণত পুরো ঘটনাস্থলকে কয়েকটি অংশে ভাগ করা হয়। ভিআইপি যে-জায়গায় থাকেন, তার সব চেয়ে কাছের অঞ্চলটিকে আগে থেকে ঘিরে রাখেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
জেলার পুলিশকর্তাদের মতে, এ বারের কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ভিআইপি-দের কাছে যাঁরা থাকবেন, তাঁদের ভাল করে তল্লাশ করতে হবে। বাদ যাবে না ভিআইপি-র সঙ্গে থাকা জিনিসপত্রও। এমনকি দূর থেকে ছুড়ে দেওয়া যায়, এমন কিছু যাতে ভিআইপি-র কাছে কোনও ভাবেই পৌঁছতে না-পারে, নজর রাখতে বলা হয়েছে সে-দিকেও।
আইবি-র বার্তা, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পিএসও বা পার্সোনাল সিকিয়োরিটি অফিসারদের এমন জায়গায় দাঁড়াতে হবে, যাতে তাঁরা ৩৬০ ডিগ্রি এলাকা জুড়ে নজরদারি চালাতে পারেন। পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ওই নিরাপত্তারক্ষীরা পিছনের দিকটা আদৌ খেয়াল না-করে নজরদারি চালান শুধু সামনের দিকেই। এই বিষয়ে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ভিআইপি নিরাপত্তা শাখা।
পুলিশ জানিয়েছে, আততায়ী যে শুধু শিনজো আবে-র কাছে পৌঁছে গিয়েছিল, তা তো নয়। এ দেশেও বিভিন্ন ভিআইপি-র কাছে পৌঁছে গিয়ে আক্রমণ করার নজির রয়েছে। এই ধরনের আক্রমণ ঠেকাতে ভিআইপি-র ‘ক্লোজ় জ়োন’ বা একেবারে কাছে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের ‘পজিশন’ এমন রাখতে বলা হয়েছে, যাতে অতর্কিতে কোনও হামলা হলে তাঁরা ভিআইপি-কে সুরক্ষা দিতে পারেন এবং তাঁকে সেখান থেকে নিরাপদে বার করে নিয়ে যেতে পারেন।