রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে দু’টাকার বিপিএল শিঙারা। — নিজস্ব চিত্র।
বাঙালির কাছে তেলেভাজার কদর বিশাল। শীত, গ্রীষ্ম হোক ঝমঝম বৃষ্টিওয়ালা বর্ষার বিকেল— মুড়ি-শিঙাড়া বা চায়ের সঙ্গে তেলেভাজার মর্ম বাঙালি মাত্রেই জানেন। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির বাজারে সব জিনিসের নাম যে হারে বাড়ছে, তাতে তেলেভাজাপ্রেমীদেরও কপালে ভাঁজ। ব্যতিক্রম, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বিপ্লবের শিঙাড়া। যা ইদানীং বহুল পরিচিতি পেয়েছে ‘বিপিএল শিঙাড়া’ নামে। দাম মাত্র দু’টাকা।
বর্ষার মরশুমে বালুরঘাট মাত করছে দু’টাকার ‘বিপিএল শিঙাড়া’। বালুরঘাটের থানা মোড় এলাকায় মিষ্টি ব্যবসায়ী বিপ্লব দামের দোকানে এই শিঙাড়া কিনতে সন্ধ্যা থেকে লম্বা লাইন পড়ছে ক্রেতাদের। দুর্মূল্যের বাজারে যেখানে সাধারণ চপের দাম হয়েছে সাত টাকা, সেখানে দু’টাকার শিঙাড়া রমরমিয়ে ক্রেতা টেনে চলছে। অবশ্য দু’টাকার শিঙাড়ার ভরা বাজার নতুন নয়। বালুরঘাটে বিগত কয়েক বছর ধরেই বিপ্লব অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে দু’টাকার শিঙাড়াও বিক্রি করেন। যা কিনতে বালুরঘাটের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যেমন ক্রেতারা আসেন, তেমনই জেলা সদরে অফিসের কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে অন্যান্য ব্লকের সাধারণ মানুষও ঠোঙাভরে শিঙাড়া কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। শিঙাড়ার নাম কেন বিপিএল? বিপ্লব বলেন, ‘‘এটা তো দোকানের দেওয়া নাম নয়। ক্রেতারাই এমন নাম দিয়েছেন। দাম কম তো, তাই বিপিএল। উদ্দেশ্য একটাই, সকলের কাছে শিঙাড়াকে জনপ্রিয় করে তোলা।’’
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাশাসকের দফতরের কর্মী উৎপল মহন্ত বলেন, ‘‘এখন সব বাড়িতেই খাবারের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়টি গুরুত্ব পেতে শুরু করেছে। মাঝবয়সিরা তেলেভাজা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু দু’টাকার এই শিঙাড়ার আকার ছোট হওয়ায় অনেকেই নির্ভয়ে খেতে পারছেন।’’
মিষ্টি ব্যবসায়ী বিপ্লবের দাবি, প্রতি দিন গড়ে আড়াই থেকে তিন হাজারটি শিঙাড়া বিক্রি হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন অফিসে ও অনুষ্ঠানের টিফিন হিসেবেও বিপিএল শিঙাড়ার কদর দিন দিন বাড়ছে। ভোজনরসিক বাঙালির রসনাতৃপ্তির জন্য নানা উপকরণ ও খাদ্যতালিকা থাকলেও তেলেভাজার একটা আলাদা চাহিদা আছে। আর সেই তেলেভাজার জগতে বালুরঘাটের বিপিএল শিঙাড়া আলাদা নাম করে ফেলেছে।