—প্রতীকী চিত্র।
তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বিহারে। স্বামীকে কাঁদতে কাঁদতে ফোনে এমনটাই জানিয়েছিলেন বধূ। স্ত্রীর খোঁজ পাচ্ছিলেন না কয়েক দিন। ওই ফোন পেয়ে স্বস্তিও যেমন পেয়েছিলেন, তেমনই পেয়েছিলেন ভয়। সঙ্গে সঙ্গে থানায় দৌড়ন স্বামী। তদন্তে নেমে অবশ্য বিহার নয়, উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসত থেকে ‘অপহৃতা’কে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, অপহরণের গল্প ফেঁদেছিলেন ওই মহিলা। আদতে তিনি প্রেমিকের সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন। মঙ্গলবার সেই যুবককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার ধৃত দু’জনকেই জঙ্গিপুর আদালতে তোলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জের রতনপুরের বাসিন্দা রাজেশ দাসের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর আগে পুরুলিয়ার রিঙ্কু রাওয়াত রায়ের বিয়ে হয়। দম্পতির চার সন্তান রয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বাজারে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি রিঙ্কু। অনেক খুঁজেও স্ত্রীর কোনও খোঁজ পাননি রাজেশ। থানায় অভিযোগ করেছিলেন। ওই ঘটনার দিন তিনেক বাদে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন পান রাজেশ। ফোনের ও পার থেকে স্ত্রীর কণ্ঠস্বর শুনতে পান। রিঙ্কু জানান, তাঁকে ওই বাজার থেকে অপহরণ করেছে এক দল দুষ্কৃতী। তাঁকে রাখা হয়েছে বিহারের কোনও একটি জায়গায়। ফোন পেয়ে আবার থানায় দৌড়ন রাজেশ। শমসেরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের ক্ষুদিরামপল্লি থেকে ওই বধূকে ‘উদ্ধার’ করে পুলিশ। সেই সঙ্গে তাঁর প্রেমিক ধর্মেন্দ্র বারুইকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
বধূর পরিবার সূত্রে খবর, ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে রিঙ্কুর প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। তবে দীর্ঘ দিনের ভালবাসার সম্পর্ক একটি গ্রাম্যবিবাদের কারণে ভেঙে যায়। রিঙ্কুর বিয়ে হয় অন্যত্র। কিন্তু বিয়ের মাসখানেকের মধ্যে আবার প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁর। কিছু দিন আগেই রাজেশের পরামর্শে রিঙ্কু অপহরণের গল্প তৈরি করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান বলে দাবি স্বামীর। অবশেষে স্ত্রীর খোঁজ পেয়ে রাজেশ পুলিশকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি। রাজেশের কথায়, ‘‘রিঙ্কু ফোন করে জানিয়েছিল, ওকে কিডন্যাপ করা হয়েছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে, একজনের সঙ্গে ও পালিয়ে গিয়েছে। পুলিশকে অনেক ধন্যবাদ যে, দু’জনকে তারা গ্রেফতার করেছে।’’