সফল: দ্বিতীয় স্থান অধিকারের পর। নিজস্ব চিত্র
মন্ত্রীর দিকে একে একে ধেয়ে এল প্রশ্নবাণ। তাতে প্যাঁচে পড়লেন ডাকসাঁইটে মন্ত্রী। দু’পক্ষের যুক্তি-পাল্টা যুক্তির লড়াই চলল। সেই বাকযুদ্ধ বেসুরো ঠেকলে পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নামতে হল স্পিকারকে। শেষে অবশ্য দু’পক্ষের মৈত্রীতেই শেষ হল সংসদের অধিবেশন।
এই দৃশ্য অবশ্য আসল সংসদের নয়। এই ছবি রাজ্য সরকার আয়োজিত যুব সংসদ প্রতিযোগিতার। এই মঞ্চেই স্কুল পড়ুয়াদের যুক্তিতর্কে অবশ্য এক টুকরো ‘আদর্শ’ সংসদের প্রতিচ্ছবি ধরা পড়ল। রাজ্য স্তরের এই প্রতিযোগিতা রবিবার, বিবেকানন্দের জন্মদিবসে অনুষ্ঠিত হল বিধাননগর গভর্নমেন্ট কলেজে। তাতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করল হুগলির শ্রীরামপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (আখনা গার্লস)। প্রথম হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল। ব্লক থেকে ধাপে ধাপে জেলা এবং আঞ্চলিক স্তর পেরিয়ে রাজ্য প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল ১০টি স্কুল। একটি দলে পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ১৫ জন।
আখনার ছাত্রীদের তৈরি নকল সংসদে সাংসদদের মুখে উঠে এল বর্তমান সময়ের নানা সমস্যা। সমস্যা থেকে বেরিয়ে কী ভাবে মানুষের উপকার করা যাবে, তা নিয়ে গুরুগম্ভীর আলোচনা হল। মহিলাদের সশক্তিকরণ, নারী সুরক্ষা, তিন তালাক, কাশ্মীর সমস্যা, ৩৭০ ধারা বিলোপ, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতবর্ষের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, জাতীয় বাজেট বক্তৃতা— সব কিছু নিয়েই যুক্তির জাল বুনল মেয়েরা। জাতীয় স্তরে খেলাধুলোর উন্নতি নিয়ে আলোকপাত করা হল। বলিষ্ঠতার সঙ্গে সভা পরিচালনা করল স্পিকার। যুব দিবসে তার মুখে শোনা গেল সহিষ্ণুতাএবং সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা। ছাত্রীদের ‘গাইড টিচার’ ছিলেন বিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা রত্না সরকার।
রানার্স হওয়ার সুবাদে ট্রফি, শংসাপত্র এবং দেড় লক্ষ টাকার চেক পেল হুগলির স্কুলটিকে। সেরা স্ক্রিপ্টের পুরস্কারও তাদের ঝুলিতে এসেছে। রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার পুরস্কার তুলে দেন। সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিযোগিতায় মেয়েদের সঙ্গে গিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষিকা আইভি সরকারও। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েদের সবার চেষ্টাতেই এই সাফল্য। ছাত্রছাত্রীরা দেশের ভবিষ্যৎ। দেশ পরিচালনার জন্য সংসদে কাজকর্ম এবং শিষ্টাচারের ব্যাপারে ওরা অনেকটা শিখতে পারল।’’