Arjun Singh

অর্জুন লক্ষ্যভ্রষ্ট! অভিযোগ সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ সংগঠনেরই

অর্জুনের অবশ্য দাবি, ‘‘দু’টি মামলাই আইনসঙ্গত। এতে ধর্মীয় বা রাজনৈতিক উস্কানির ব্যাপার নেই।’’

Advertisement

প্রকাশ পাল

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২০ ০৬:১৬
Share:

ফাইল চিত্র

বিজেপির অন্দরে তাঁর অবস্থান নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের কার্যকলাপ নিয়ে এ বার অভিযোগ তুলল আরএসএস ঘনিষ্ঠ মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ তুলে তারা চাঁছাছোলা ভাষায় অর্জুনকে আক্রমণ শানিয়েছে। এই নিয়ে দিল্লিতে নালিশও জানিয়েছে। মঞ্চের অভিযোগ, বিজেপি তথা সঙ্ঘের নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করছেন তৃণমূল ছেড়ে আসা এই নেতা।

Advertisement

মঞ্চের পশ্চিমবঙ্গের সংযোজক, হুগলির বাসিন্দা সৈয়দ আলি আফজল চাঁদের অভিযোগ, ‘‘মসজিদে আজানের সময় মাইক ব্যবহার বন্ধ করতে এবং ইদুজ্জোহা পরবে পশুহত্যা বন্ধ করতে অর্জুন আদালতে মামলা করেছেন। দূষণের নামে বেছে বেছে মুসলিমদের ধর্মীয় বিষয়গুলির উপরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে টার্গেট করে মামলা করছেন তিনি।’’ চাঁদের খোঁচা, পায়ের তলায় মাটি না থাকায় অর্জুন দিল্লিতে নিজের নম্বর বাড়াতে এই সব করছেন। এতে সংখ্যালঘু-সহ সব শ্রেণির মানুষ ক্ষুব্ধ হচ্ছেন।

সম্প্রতি মঞ্চের জাতীয় সংযোজক তথা এ রাজ্যের পর্যবেক্ষক শাহিদ আখতারকে পাঠানো চিঠিতে চাঁদ অভিযোগ করেছেন, অর্জুন ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওঁর গা থেকে যে এখনও তৃণমূলের গন্ধ যায়নি, এই সব কার্যকলাপেই তা স্পষ্ট।’’ চিঠি পাঠানো হয়েছে মঞ্চের মুখ্য মার্গদর্শক ইন্দ্রেশ কুমারের কাছেও।

Advertisement

এ ব্যাপারে তৃণমূল শিবিরের বক্তব্য, বিজেপি হিন্দুত্ববাদী দল। নানা কাজেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘বিভিন্ন অজুহাতে ওরা সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াচ্ছে। ওদের সংগঠনের কথা সেটাই প্রমাণ করছে। তবে, এক জন নয়, এটা গোটা বিজেপি দলেরই ধর্ম।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘ওদের দু’টিমাত্র কর্মসূচি। এক, ধর্মে ধর্মে লড়াই লাগানো। দুই, বিরোধী দলের লোকজনকে মিথ্যা অভিযোগে জেলে পোরা।’’

অর্জুনের অবশ্য দাবি, ‘‘দু’টি মামলাই আইনসঙ্গত। এতে ধর্মীয় বা রাজনৈতিক উস্কানির ব্যাপার নেই।’’ সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ সংগঠনের তোলা অভিযোগে তৃণমূল রাজনৈতিক সুবিধা পাবে? অর্জুনের জবাব, ‘‘এমন কোনও সংগঠন আছে কিনা, আমার জানা নেই।’’

আন্দোলনের নামে সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছড়াতে অর্জুন মাঝেমধ্যেই গঙ্গা পেরিয়ে হুগলিতে আসছেন বলে তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ। মাস কয়েক আগে হুগলিতে গোলমাল হয়। সেই সময় অর্জুন এবং হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় অকুস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের আটকায়। তখন দু’পক্ষের বাদানুবাদ হয়। দুই সাংসদ ওই সংঘর্ষ নিয়ে নিয়ে নানা মন্তব্য করেন। তার জেরে সাম্প্রদায়িক উস্কানির অভিযোগে লকেট-অর্জুনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। তাঁরা অবশ্য অভিযোগ মানেননি।

মুসলিম মঞ্চের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আজানের বিষয়ে বক্তব্য অর্জুনবাবুর ব্যক্তিগত। আর, আমরা গোহত্যার বিরুদ্ধে কথা বলি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বিজেপি সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলে। সেটা কাজেও করে। কিন্তু বিশেষ কোনও ধর্মকে তোষণ করে না। এটা তৃণমূল করে থাকে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement