প্রতীকী ছবি।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে হাওড়ায় কমেছে কোভিড সংক্রমণের হার। তবে এ জন্য আত্মতুষ্টিতে না-ভুগে হাওড়ায় আরও একটি ৪০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ কোভিড হাসপাতাল তৈরিতে উদ্যোগী হল জেলা প্রশাসন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়ার পরে বালিটিকুরি ইএসআই সেফ হোমটিকে পূর্ণাঙ্গ কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করার কাজ শুরু হয়েছে। ৪০০ শয্যার পাশাপাশি সেখানে থাকছে ৫০টি ভেন্টিলেটর। চলতি সপ্তাহেই ওই হাসপাতাল চালু হয়ে যাবে বলে খবর।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, পয়লা থেকে ৭ অগস্টের তুলনায় ১৫ থেকে ২১ অগস্ট— এই সাত দিনে হাওড়ায় সংক্রমণের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। দফতরের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, ১ থেকে ৭ অগস্টের মধ্যে যেখানে সংক্রমণের মাত্রা ছিল ১৭.১ শতাংশ, সেখানে ১৫ থেকে ২১ অগস্টের মধ্যে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩.৪ শতাংশে।
হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘সাত দিনে সংক্রমণের মাত্রা এতটা কমে যাওয়া গত চার মাসে হয়নি। এটাই আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে। তা সত্ত্বেও আগামী দিনে কোভিড কোন জায়গায় পৌঁছতে পারে, তা ভেবে হাওড়ায় আরও একটি কোভিড হাসপাতাল তৈরির অনুমতি মিলেছে। চলতি সপ্তাহেই সেটির উদ্বোধন হয়ে যাবে।’’
ওই অফিসার জানান, বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতালের অ্যানেক্স ভবনটি এত দিন সেফ হোম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। সম্প্রতি ইএসআই কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ওই হাসপাতালটিকেই কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ভেন্টিলেটর-সহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি। সোমবার মিশন ডিরেক্টরেটের সচিব-সহ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সচিব পর্যায়ের লোকজন হাসপাতালটি পরিদর্শন করেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তারাই ওই হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ করবে। খাবার এবং পোশাক কাচার দায়িত্বও তারা নেবে। এর জন্য ২০ জন চিকিৎসক এবং ৩০ জন নার্সকে সেখানে পাঠানো হচ্ছে। সিসিইউয়ে কাজ করার জন্য তাঁদের এই মুহূর্তে প্রশিক্ষণ চলছে হাওড়া জেলা হাসপাতালে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, এত দিন গোটা জেলায় সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে সাতটি কোভিড হাসপাতাল ছিল। সব মিলিয়ে শয্যা ছিল ৯০০টি। এ বার ৫০টি ভেন্টিলেটর-সহ ৪০০ শয্যার এই হাসপাতাল চালু হয়ে গেলে হাওড়ায় কোভিড শয্যার সংখ্যা দাঁড়াবে ১৩০০-য়। দফতরের বক্তব্য, হাওড়া শহরে লেভেল ফোর (গুরুতর ভাবে সংক্রমিত) কোভিড রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এই স্তরের হাসপাতালের প্রয়োজন ছিল। বালিটিকুরি ইএসআই সেই ঘাটতি মেটাবে বলেই স্বাস্থ্যকর্তাদের আশা।