ফাইল চিত্র
ট্র্যাফিক সিগন্যাল না-মানায় শুক্রবার বিকেলে আরামবাগের বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরার ছেলে পিনাকীর গাড়ি আটকেছিলেন ট্র্যাফিক পুলিশ। এ জন্য এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট এবং তাঁর সহকর্মীদের হেনস্থার অভিযোগ উঠল বিধায়ক-পুত্রের বিরুদ্ধে। ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে অশান্তির কথা স্বীকার করলেও হেনস্থার কথা মানেননি তিনি।
মহকুমা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়িটি শহরের কোর্ট রোড থেকে বাসস্ট্যান্ড মোড়ে ওঠার সময় সিগন্যাল না-মেনেই হাসপাতাল মোড়ের দিকে যেতে চাইছিল। কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশ সেই গাড়ি আটকায়। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন বিধায়ক-পুত্র পিনাকী। নিয়মমতো তাঁর কাছে গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হয়। কেন তিনি সিট-বেল্ট বাঁধেননি, তা-ও জানতে চাওয়া হয়। তাতেই খেপে গিয়ে বাবার পরিচয় দিয়ে পিনাকী হুমকি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ।
গোলমাল দেখে ওই এলাকায় কর্তব্যরত ট্র্যাফিক সর্জেন্ট সরোজ কুণ্ডু ঘটনাস্থলে যান। তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলে অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘ওই যুবকের ঔদ্ধত্যে ট্র্যাফিক পুলিশ গাড়ির চাবি খুলে নিলে তিনি গালিগালাজ করতে থাকেন। আমি তাঁকে সংযত হতে বললে আমাকে ধাক্কাধাক্কি করেন। এসডিপিও-সহ জেলা স্তরে বিষয়টি মৌখিক ভাবে জানিয়েছি।’’
এসডিপিও (আরামবাগ) নির্মলকুমার দাস জানিয়েছেন, বিষয়টা মিটে গিয়েছে। ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা সকলের জন্য সমান। সবাইকে মানতে হবে। পিনাকীর দাবি, ‘‘ট্র্যাফিক পুলিশকে বলেছিলাম, সিগন্যাল লঙ্ঘন
করে থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিন। কিন্তু ওঁরা গাড়ির চাবি খুলে নেন। তখনই বাবার পরিচয় দিতে হয়। গাড়িটি বাবারই। সেটা শুনে ওঁরা ভুল ব্যাখ্যা করেন। তাতেই অশান্তি হয়। আমি গালিগালাজ করিনি।”
ছেলেকে জড়িয়ে এই বিতর্ক নিয়ে বিধায়ক বলেন, “ছেলে-সহ আত্মীয়দের স্পষ্ট বলা আছে, কেউ যেন আমার বিধায়ক পদের সুযোগ না নেন। সিগন্যাল ভাঙলে আইনগত ব্যবস্থা ছিল। তা না করে ট্র্যাফিক পুলিশ গাড়ির চাবি খুলে নেওয়ায় ছেলে বিষয়টা আমাকে জানাতে চেয়েছিল। যাতে কোথাও গেলে আমি অন্য ব্যবস্থা করতে পারি।”
দুর্ঘটনা এবং যানজট আরামবাগ শহরে লেগেই রয়েছে। তাতে জেরবার হতে হয় বহু মানুষকে। ভুক্তভোগীরা মনে করেন, ট্র্যাফিক আইন নিয়ে পুলিশ যেমন কড়া হতে পারেনি, তেমনই মানুষও নিয়ম মানার ধার ধারেন না। এই দুই কারণেই দুর্ঘটনা ও যানজট এড়ানো যাচ্ছে না।