লগন ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানার গেটের সামনে জটলা
কুড়ি মাসেরও বেশি বন্ধ লগন ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানা খুলছে আজ, শুক্রবার।
নর্থব্রুক, গোন্দলপাড়া জুটমিলের পরে দুর্গাপুজোর মুখে এই নিয়ে পর পর তিন দিনে তিনটি বন্ধ কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত হল। যা ‘বেহাল’ হুগলি শিল্পাঞ্চলে কিছুটা হলেও খুশির বাতাবরণ ফেরাল।
লগন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে জুটমিলের যন্ত্রপাতি তৈরি হয়। রিষড়া, ভদ্রেশ্বর এবং আদিসপ্তগ্রামে তিনটি বিভাগ রয়েছে। শ্রমিক সংখ্যা প্রায় আড়াইশো। বৃহস্পতিবার এই কারখানা নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয় চন্দননগরের যুগ্ম শ্রম-কমিশনার কিংশুক সরকারের দফতরে। মিলের দুই আধিকারিক শুভব্রত রায়, মানস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পাঁচটি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা বৈঠকে ছিলেন। বৈঠক শেষে যুগ্ম শ্রম-কমিশনার জানান, আজ, শুক্রবার থেকেই মিল খুলে যাচ্ছে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শ্রম দফতর সূত্রের খবর, ২০১৯ সালের গোড়ায় ওই কারখানার শ্রমিক সংগঠন ধর্মঘট করে। দু’মাস পরে তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করলেও আর্থিক ক্ষতির কারণ দেখিয়ে কর্তৃপক্ষ উৎপাদন চালু করেননি। ওই বছরের ১৮ মার্চ ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করা হয়। তা সত্ত্বেও ওই ঘোষণার পরে কম মজুরিতে শ্রমিকদের দিয়ে উৎপাদনের অভিযোগ উঠেছিল। শ্রম দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালানো হয়েছিল। তবে তেমন কিছু দেখা যায়নি। দু’-চার জন শ্রমিক জরুরি কাজ তো করতেই পারেন। সেটা ধর্তব্যের মধ্যে আসে না।’’
পুজোর মুখে তিন কারখানা ঝাঁপ খোলার সিদ্ধান্তে আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব স্বস্তিতে। সংগঠনের জেলা সভাপতি বিদ্যুৎ রাউত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘শ্রমিকদের মুখে হাসি ফুটেছে। শ্রম দফতর, মালিকপক্ষ, শ্রমিক সংগঠন এবং শ্রমিকদের আন্তরিক চেষ্টাতেই কারখানাগুলি খোলা গেল।’’ চন্দননগরের প্রাক্তন বিধায়ক, সিটু নেতা রতন বন্দ্যোপাধ্যায় মিল খোলার পিছনে ‘ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক-আন্দোলন’ এবং তা নিয়ে ‘নাগরিক সমাজের সহযোগিতা’র সুফল দেখছেন।
গোন্দলপাড়া এবং লগনের শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন করেছে চন্দননগরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি’। সংগঠনের কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শ্রমিকেরা সঙ্কটে ছিলেন। কারখানা খোলায় তাঁদের সুরাহা হল।’’
নর্থব্রুক জুটমিল আগামী মঙ্গলবার খুলবে। সেই খুশিতে এ দিন বাম-কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন চাঁপদানিতে বিজয়-মিছিল করে। সভাও হয়। কর্মসূচিতে শামিল হন স্থানীয় বিধায়ক তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, সিটু নেতা তীর্থঙ্কর রায় প্রমুখ।