বেহাল: এমনই দশা লিলুয়ার চকপাড়ার রাস্তার। বৃহস্পতিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
একে তো সামান্য বৃষ্টিতে জল জমছে। সেই জল নামছে না দু’-তিন দিন পরেও। তার উপরে অর্ধেক বুজে যাওয়া পুকুরে স্তূপীকৃত হয়ে রয়েছে আবর্জনা। বৃষ্টিতে তা ভেসে আসছে রাস্তার জমা জলে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ভাঙাচোরা রাস্তা। জলে ডুবে থাকা বড় বড় গর্ত বুঝতে না-পেরে প্রায়ই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা।
এমনই দুর্বিষহ অবস্থা লিলুয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রশাসনকে বার বার বলেও কাজ না-হওয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগের ঝড় তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, সব চেয়ে খারাপ অবস্থা চকপাড়া এবং লিলুয়া স্টেশন রোডের। জমা জল আর ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে হাঁটা যাচ্ছে না। রাস্তার ধারের সব নর্দমা সামান্য বৃষ্টিতে উপচে পড়ছে। সেই পাঁক-জলে ভাসছে এলাকা।
স্থানীয় বাসিন্দা সনাতন বসু বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতি গত ৩০ বছরে হয়নি। করোনার জন্য গত চার মাস আবর্জনা সাফাইয়ের কাজ অনিয়মিত হয়েছে। পুরসভার সাফাইকর্মীরা নর্দমার পলি না-তোলায় গোটা এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা রুদ্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ বাসিন্দাদের অভিযোগ, চকপাড়া এলাকায় একটি আধবোজা পুকুরে ফেলা হচ্ছে সমস্ত জঞ্জাল। বৃষ্টিতে সেই পুকুর উপচে রাস্তায় ছড়াচ্ছে আবর্জনা। তার মধ্যে দিয়েই চলছে গাড়ি, যাতায়াত করছেন পথচারীরা। স্থানীয় বাসিন্দা মৌমিতা মান্না বলেন, ‘‘ওই রাস্তা দিয়ে শিক্ষকের কাছে পড়তে যায় ছেলে। আবর্জনার উপর দিয়েই চলতে হয়। এ ভাবে কোনও সু্স্থ মানুষ থাকতে পারে? কবে এর থেকে মুক্তি মিলবে?’’
এলাকার পরিস্থিতি যে খারাপ, তা মানছেন উত্তর হাওড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্ল। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের থেকে অভিযোগ পেয়ে আমি হাওড়া পুরসভার কমিশনারকে নিয়ে উত্তর হাওড়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরেছি। তাঁদের কথা দিচ্ছি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’’
হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘পাম্প বসিয়ে এলাকার জমা জল বার করা হচ্ছে। আধবোজা পুকুর থেকে আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ শুক্রবারই শুরু হবে। পাশাপাশি, বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করার ব্যবস্থা হচ্ছে। তার পরেও কেউ যদি রাস্তায় জঞ্জাল ফেলেন, তাঁকে জরিমানা করা হবে।’’ তিনি জানান, বর্ষায় রাস্তাঘাট পুরোপুরি মেরামত করা যাবে না। তবে খোয়া ফেলে চলাচলের উপযুক্ত করার চেষ্টা করা হবে।