হাসপাতালের ফটকে নেই নজরদারি — নিজস্ব চিত্র।
কোভিড হাসপাতাল ঘোষণা হওয়ার পরেই বহিরাগতদের যাতায়াত ঠেকাতে পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছিল উলুবেড়িয়া ইএসআই হসপিটালে। অভিযোগ, ক্যাম্প থাকলেও সম্প্রতি সেখানে দেখা মিলছে না পুলিশকর্মীদের। ফলে, বাইরের লোকজন যেমন হাসপাতালে ঢুকছেন, তেমনই কোভিড ওয়ার্ড থেকে রোগী বাইরে যাচ্ছেন। এতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। ক্যাম্পে ২৪ ঘণ্টা পুলিশকর্মী রাখার আর্জি জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিঠি পাঠিয়েছেন পুলিশ ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে।
হাসপাতালের সুপার সুবীরকুমার বর্মণ বলেন, ‘‘সরকার করোনা হাসপাতাল ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে গেটের সামনে পুলিশ ক্যাম্প করা হয়েছিল। কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালের সামনে কোনও পুলিশকর্মী নেই। সেখানে যাতে ফের পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়, তার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে চিঠি করেছি।’’
স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের দাবি, হাসপাতাল গেটে পুলিশকর্মী না-থাকায় বাইরের লোকজন ঢুকছে। তাঁদের আরও দাবি, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীকেও গেটের বাইরের দোকান থেকে বিড়ি-সিগারেট কিনতে দেখা গিয়েছে। এই ঘটনা সত্যি কিনা জানতে চাইলে হাসপাতাল সুপার ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কিছুই বলেননি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এ নিয়ে কিছু বলব না।’’ যদিও হাসপাতালের চিকিৎসক হিমাদ্রি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রোগীরা কোভিড ওয়ার্ড থেকে বাইরে বেরিয়ে গেলে এলাকায় সংক্রমণ ছড়াবে।’’
ক্যাম্পে পুলিশকর্মী না-থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে মহকুমাশাসক (উলুবেড়িয়া) অরণ্য বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ হাওড়া (গ্রামীণ) জেলার পুলিশ সুপার সৌম্য রায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এমন হওয়ার কথা নয়। তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি। হাসপাতাল থেকে পুলিশ ক্যাম্প তুলে নেওয়া হয়নি। তবু কেন সেখানে পুলিশকর্মী থাকছেন না, তার খোঁজখবর করা হবে।’’ হাসপাতাল থেকে ক্যাম্প তোলা হয়নি বলে জানান পুলিশ সুপার।’’ হাসপাতালের আর এক কর্মী বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগে ফুলেশ্বরের একটি বেসরকারি করোনা হাসপাতাল থেকে এক রোগী নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। পরে তাঁর দেহ সংলগ্ন একটি পুকুরে পাওয়া যায়। পুলিশ ক্যাম্পে পুলিশ না-থাকায় আমাদের হাসপাতালেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে।’’
হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখন উলুবে়ড়িয়া ইএসআই হাসপাতালে ১৫ জন করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে। সেখানে কোভিড শয্যার সংখ্যা ১০০। চিকিৎসক ও নার্স-সহ হাসপাতালের কর্মী সংখ্যা দেড়শোর মতো।