প্রতীকী ছবি
হাওড়া জুড়ে করোনা সংক্রমণ ক্রমাগত ছড়িয়ে পড়ায় লালারসের নমুনা পরীক্ষার উপরে জোর দিয়েছিল হাওড়া জেলা প্রশাসন। থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের পরে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে প্রায় ৩৫০ জন বাসিন্দার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল তিন দিন আগে। কিন্তু অভিযোগ, তিন দিন পরেও সেই পরীক্ষার রিপোর্ট এসে পৌঁছয়নি। যার ফলে বিপাকে পড়েছে জেলা প্রশাসন। রবিবার পর্যন্ত হাওড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৪। মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। জেলা প্রশাসনের আশঙ্কা, ওই ৩৫০ জনের রিপোর্ট এলে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
গত এক সপ্তাহ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে হাওড়ার কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের উপরে জোর দেওয়া হয়। থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের পরে যে সব বাসিন্দার করোনার লক্ষণ রয়েছে, তাঁদের পুরসভার চারটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠিয়ে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন দিন আগে সাড়ে তিনশো জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠানো হয়। কিন্তু সেই রিপোর্ট আজও এসে পৌঁছয়নি। যদিও এর জন্য নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা কমবে না বলে জানিয়েছেন হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস।
এ দিন ভবানীদেবী বলেন, ‘‘রিপোর্ট এসে না পৌঁছলেও নমুনা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কমবে না। বরং বাড়বে। কারণ আজ থেকে ডুমুরজলা কোয়রান্টিন কেন্দ্র ও সত্যবালা আইডি হাসপাতালের সামনে যেমন নমুনা সংগ্রহের জন্য সরকারি চিকিৎসকদের নেতৃত্বে কিয়স্ক বসানো হয়েছে, তেমনই পাড়ায় পাড়ায় মোবাইল ভ্যান পাঠিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।’’ এ ছাড়া আজ, সোমবার আরও চারটি কিয়স্ক নমুনা সংগ্রহের জন্য দক্ষিণ হাওড়ায় পাঠানো হবে বলেও তিনি জানান।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শুধু রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর নয়, বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগেও সোমবার থেকে ডুমুরজলা ও সত্যবালা আইডিতে বিশেষ ক্লিনিক খোলা হচ্ছে। ওই ক্লিনিক দুপুর ২টো থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। কেউ ইচ্ছে করলে ওই বেসরকারি প্যাথলজি ক্লিনিকে গিয়েও পরীক্ষা করাতে পারেন। তবে পরীক্ষার জন্য সাড়ে চার হাজার টাকা দিতে হবে।
জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, নমুনা সংগ্রহের জন্য যাবতীয় সাহায্য রাজ্য সরকার করেছে। এমনকি সংক্রমিত এলাকায় বিশেষ দল পাঠিয়ে নমুনা সংগ্রহের কাজ হচ্ছে। যেমন এ দিন উত্তর হাওড়ার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওড়িয়াপাড়ায় প্রায় আড়াইশো মানুষের থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘যত পরীক্ষা হবে তত ভাল। মে মাসে যে হেতু করোনার আক্রমণ তুঙ্গে উঠবে আমরা পরীক্ষার উপরে জোর দিয়েছি। তবে পরীক্ষার ফলাফল যত তাড়াতাড়ি মেলে ততই ভাল। তাই আমরা রাজ্য সরকারের কাছে নাইসেড বা এসএসকেএমেও নমুনা পাঠানোর জন্য আবেদন করেছি।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জেলায় কোভিড হাসপাতাল আরও বাড়ানো হচ্ছে। আন্দুল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতাল করা হচ্ছে। শয্যা বাড়ানো হচ্ছে গোলাবাড়ির বেসরকারি হাসপাতালেও। এ ছাড়া বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতালটিকে ৩০০ শয্যার রাজ্য স্তরের কোভিড হাসপাতাল করা হচ্ছে।