গরহাজির: হাতে গোনা লোক জনশুনানিতে। নিজস্ব চিত্র
কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে মানুষের নানা অভিযোগ রয়েছে। কখনও উপভোক্তা তালিকায় নাম না ওঠা, কখনও বরাদ্দের টাকা না মেলা—এমনই হরেক অভিযোগ উঠেছে মাঝেমাঝেই। ২০১৮-২০১৯ অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকারের ছ’টি প্রকল্পে রূপায়ণে হুগলির সমস্ত পঞ্চায়েত স্তরের মানুষের অভিযোগ শোনার জন্য সভার আয়োজন করা হয়েছিল। বুধবার গোঘাট-১ ব্লকের ৬টি (কুমুড়শা, গোঘাট, শ্যাওড়া, নকুন্ডা, রঘুবাটি এবং ভাদুর) পঞ্চায়েতের সেই সামাজিক নিরীক্ষার জনশুনানি সভায় এলেন না এলাকার বাসিন্দারাই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সভাগুলিতে ৫০ থেকে ১০০ জনের বেশি মানুষ যোগ দেননি। যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরাও কার্যত কোনও সমস্যার কথাই জানাননি। ফলে এই শুনানি সভা একপ্রকার প্রহসনই হয়ে গেল বলে অভিযোগ।
বিভিন্ন ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে নিয়মকানুন না মেনে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শাসক দলের অনুগতদের নাম ঢোকানোর সুপারিশ আসে। আবার জাতীয় সমাজিক সহায়তা প্রকল্পের আওতায় বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতা নিয়ে মূল অভিযোগ হল, প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করে ৩ থেকে ৫ বছর পার হলেও তার অনুমোদন হয় না। প্রতি মাসে ভাতা পাওয়ার কথা থাকলেও এক-দু মাস অন্তর ভাতা মেলে।
১০০ দিন কাজ প্রকল্পের গুরুতর অভিযোগগুলির অন্যতম, মাস্টার রোলে ভুয়ো শ্রমিকের নাম ঢোকানো। মাটি কাটার প্রকৃত মাপের চেয়ে জরিপে বেশি দেখানোর অভিযোগও ওঠে। জবকার্ডেরও হদিশ নেই। মহিলা শ্রমিকদের জন্য কাজের ক্ষেত্রের কাছাকাছি কোনও অস্থায়ী শৌচাগার থাকে না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সভায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি নেই কেন? গোঘাট-১ ব্লকের ভাদুর পঞ্চায়েত প্রধান শান্তি নাথ রায় বলেন, “১০০ থেকে ১৫০ মত লোক রাখলেই সামাজিক নিরীক্ষার কাজ হয়ে যায়। তাই বেশি লোককে বলা হয়নি।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্যাওড়া পঞ্চায়েতের এক সুপারভাইজার বলেন, “আমরা কী অভিযোগ করব, তা পঞ্চায়েত সদস্যরাই শিখিয়ে দিয়েছেন। আসল সমস্যা এড়িয়ে মামুলি সব অভিযোগ করা হয়েছে।’’
মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত যোগদানে ঘাটতির কথা স্বীকার করে জেলার এক বিডিও-র বক্তব্য, “জনশুনানিতে হাজির থাকার জন্য পঞ্চায়েত প্রচার করেছে। সেখানে যেতে কারও অসুবিধা থাকলে ব্লক স্তরের সভাতেও আসতে পারেন।”