আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক। নিজস্ব চিত্র
রক্তসঙ্কট কিছুটা কেটেছে। মাসে গড়ে ১৫-২০টি শিবিরও হচ্ছে। কিন্তু এক মাস ধরে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কের মেডিক্যাল অফিসার আসছেন না বলে অভিযোগ। ফলে, সাত জন টেকনিশিয়ানের ভরসায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে ব্লাডব্যাঙ্কটি। আরামবাগ পুর এলাকা এবং সংলগ্ন হাওড়া, বর্ধমান, বাঁকুড়া ও দুই মেদিনীপুরের রোগীরা এই ব্লাডব্যাঙ্কের উপর নির্ভরশীল।
মহকুমা হাসপাতালের সুপার সিদ্ধার্থ দত্ত বলেন, “এক মাস হয়ে গেল, কিছু না-জানিয়েই মেডিক্যাল অফিসার আসছেন না। যোগাযোগ করেও সাড়া মেলেনি। ওখানকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
ব্লাডব্যাঙ্কের মেডিক্যাল অফিসার অজয় নিয়োগীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি যা বলার স্বাস্থ্য দফতরকে বলেছি।” মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, “ওই চিকিৎসককে দিন চারেক আগে শো-কজ় করা হয়েছে। কোনও উত্তর মেলেনি। সাত দিনের মধ্যে জবাব না-পেলে বিভাগীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
এ দিকে, এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের কাজ করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনিশিয়ানরা। ভুলত্রুটি নিয়ে তাঁরা আতঙ্কে ভুগছেন।
তাঁদের কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, একমাত্র মেডিক্যাল অফিসারের উপস্থিতিতেই যে সব কাজ হওয়ার কথা, তা তাঁদেরই করতে হচ্ছে। যেমন, কোনও রোগীকে রক্ত দিতে হলে তাঁর রক্তের সঙ্গে মজুত রক্তের ‘ক্রস ম্যাচ’ করাতে হয়। একমাত্র মেডিক্যাল অফিসারের উপস্থিতিতেই এই কাজ করা হয়। তবে, তাঁরা সেই কাজ ত্রুটিহীন ভাবে করছেন বলে দাবি করেছেন। জরুরি প্রয়োজনে কোনও রোগীর আত্মীয় রক্ত দিতে চাইলে তিনি আদৌ তা দিতে পারেন কিনা, সেই ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’ নিয়েও সমস্যা হয়।
হাসপাতাল সুপার অবশ্য বলেন, “একেবারে টেকনিসিয়ানদের ভরসায় ব্লাডব্যাঙ্ক চলছে, তা নয়। ফিটনেস সার্টিফিকেট-সহ ঝুঁকির কাজগুলি করতে অন্য চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা হয়। তবে প্রশাসনিক কাজে খুবই সঙ্কট দেখা দিয়েছে। মেডিক্যাল অফিসারের নামেই ব্লাডব্যাঙ্কের লাইসেন্স হয়। ব্লাডব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট পরিচালনায় তাঁর সই দরকার হয়। শিবির করতে যে খরচ হয় তিনি না-থাকায় সেই টাকা মিলছে না। ধার করে চালাতে হচ্ছে।”